সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
উপাচার্য নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। অবিলম্বে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ২য় দিনের মতো কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রায় এক ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এতে দুইপাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
এর আগে কর্মসূচিতে অংশ নিতে বেলা ১১টা থেকে ক্যাম্পাসের বটতলায় জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে প্রশাসন ভবন হয়ে প্রধান ফটকে গিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এসময় তারা ইবিতে অবিলম্বে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এমনকি দাবি মানা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য মহাসড়ক অবরোধেরও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারের উচিত সবার আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সংস্কার করা। কিন্তু তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাঝে বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলেও ইবির মতো বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও নিয়োগ দেয়া হয়নি, যা খুবই দুঃখজনক। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও আমরা ক্লাসে ফিরতে পারিনি। উপাচার্য নিয়োগের জন্য কর্মসূচি পালন করেও আশার আলো পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তা ব্লক করেছি। শুক্রবার যে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে, সে সময়ের মাঝে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া না হলে রাস্তা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, আমাদের দাবি একটাই, দ্রুত একজন যোগ্য, সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও একাডেমিশিয়ান উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে। কোনো নির্দিষ্ট দলের এজেন্ডা বস্তবায়নকারীকে আমরা উপাচার্য হিসেবে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাজ করবেন এরকম সংস্কারমনা উপাচার্য চাই। এমন উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে যিনি সন্ত্রাসীদের ক্যাম্পাস থেকে চিরতরে বয়কট করবে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে কাজ করবে। আর অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকীকরণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, অতি স্বল্প সময়ে উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি। যে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে তাকে সংস্কারমনা হতে হবে। যিনি শিক্ষার্থীদের চাহিদাকে গুরুত্ব দিবেন। যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বিরোধীতা করবে অথবা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কেউ উপাচার্য হলে তাকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না। যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু তাতে কোনো ফল না পেলে তারা গত শুক্রবার মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকালে কোনো দুর্নীতিবাজকে উপাচার্য নিয়োগ দিলে তাকে প্রতিহতের কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এছাড়াও উপাচার্য নিয়োগে সরকারকে ৪৮ ঘন্টার সময় বেঁধে দেয় শিক্ষার্থীরা।
এমআই