আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, 'আমাদের শত্রু একটাই।' আজ শুক্রবার দেশটির রাজধানী তেহরানে হাজার হাজার মুসল্লির সামনে জুমার খুতবায় তিনি এ কথা বলেন।
খামেনি বলেন, 'আমাদের শত্রুদের নেওয়া নীতিগুলো বিভাজন এবং রাষ্ট্রদ্রোহের বীজ দ্বারা রোপিত। তাদের উদ্দেশ্য সব মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা। ফিলিস্তিনি, লেবানিজ, মিশরীয় ও ইরাকি এদের প্রত্যেকের শত্রু একই। তারা ইয়েমেনি ও সিরিয়ার মানুষদের শত্রু।'
ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও হিজবুল্লাহর অবস্থানে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলার পর প্রথমবারের মতো জনগণের সামনে ভাষণ দিলেন খামেনি। এছাড়াও প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথম জুমার খুতবা দিলেন তিনি।
খামেনির খুতবা শুনতে তেহরানে হাজার হাজার ইরানি জড়ো হন। তাদের কেউ কেউ হিজবুল্লাহর সবুজ ও হলুদ পতাকা প্রদর্শন করেন, আবার কারো কারো হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।
খামেনি যে মঞ্চে ভাষণ দেন, সে মঞ্চে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহর ছবি ও খামেনির ছবি পাশাপাশি রাখা হয়।
উল্লেখ্য, হিজবুল্লাহর নেতা নাসরুল্লাহ সম্প্রতি লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। তিন দশকের বেশি সময় ধরে হিজবুল্লাহর নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।
ইসরায়েলে হামাস ও ইরানের হামলা ' আইনি ও বৈধ'
খুতবার একপর্যায়ে খামেনি গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলা ও ইরানের সাম্প্রতিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে 'আইনি ও বৈধ' বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আগ্রাসনকারীদের হাত থেকে প্রতিটি দেশ, প্রত্যেক মানুষের আত্মরক্ষার চূড়ান্ত অধিকার রয়েছে। মুসলিম দেশগুলোকে তাদের 'সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা' প্রস্তুত করতে হবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। জবাবে গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। চলমান এ হামলায় ৪১ হাজার ৭৮৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯৬ হাজার ৭৯৪ জন।
''ইরানের হামলা ইসরায়েলের অপরাধের 'ন্যূনতম শাস্তি' মাত্র''
এদিকে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খামেনি ইসরায়েলে ইরানের হামলার প্রশংসা করেছেন এবং এ হামলাকে সম্পূর্ণ 'বৈধ' বলে অভিহিত করেছেন। খুতবায় তিনি বলেন, ইরান যা করেছে, তা ইসরায়েলের করা 'বিরাট অপরাধের' 'ন্যূনতম শাস্তি' মাত্র।
তিনি ইসরাইলকে 'ভ্যাম্পায়ার' সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্রকে এ অঞ্চলে দাপিয়ে বেড়ানো 'পাগলা কুকুর' বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে 'শক্তি ও ধৈর্য' নিয়ে 'এ সম্পর্কিত যেকোনো দায়িত্ব' পালন করবে।
খামেনি পরপর দুবার জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েলের প্রশ্নে ইরান 'দ্বিধা' করবে না বা 'দীর্ঘসূত্রিতা' করবে না।
এমআই