শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

‘ক্লাসের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে পেটাব’ ছাত্রীকে ইবি শিক্ষক

সোমবার, অক্টোবর ৭, ২০২৪
‘ক্লাসের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে পেটাব’ ছাত্রীকে ইবি শিক্ষক

সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:

‘তিনি আমার চরিত্র নিয়ে বিভিন্ন সময় ক্লাসে সবার সামনে বাজে মন্তব্য করেছেন। সবার সামনে আমাকে হেনস্তা করে বলেছেন, তুমি কোন দোকানের লাড্ডু খাও, তাও আমি জানি। কোনো ছেলের সঙ্গে ঘুরো সব খবর আমার কাছে আসে। আমি কোন জামা পরলাম, কার সঙ্গে কোথায় ঘুরতে গেলাম এসব নিয়ে ক্লাসে সবার সামনে অপমান করতেন। দুইদিন ডিপার্টমেন্টে না আসায় আমাকে ক্লাসে সবার সামনে তিনি ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। বিভাগের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী তার দ্বারা হ্যারেজড। আমাদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে খোঁজখবর লাগাতেন। উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতে এসব কথা বলছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লামিয়া হোসেন। অভিযোগগুলো বিভাগটির সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ ছাড়াও শ্রেণিকক্ষে সবার সামনে ছাত্রীদের ‘নষ্টা ও বাজারের মেয়ে’সহ প্রকাশের অনুপযোগী বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ, কথা না শুনলে মার্ক কম দেওয়া, মেয়েদের পার্সোনাল নাম্বারে কল দিযে বিরক্ত করা, ফেইক আইডি দিয়ে বিভিন্ন ছাত্রীর সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ কথোপকথন ও ছাত্রদের জোরপূর্বক সমকামীতায় বাধ্য করা সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সোমবার এসব অভিযোগ তুলে ওই শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টায় রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের সামনে ওই শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে জড়ো হয় তারা।  শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ২টায় প্রধান ফটক অবরোধ করে দুপুরের সিডিউলের বাস আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী এসে উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনার আশ্বাস দিলে তারা প্রধান ফটক ছেড়ে দেন। পরে দুপুর ৩টায় উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি-দাওয়া জানান। এসময় তারা উপাচার্য বরাবর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৭ টি অভিযোগ এনে তার বহিষ্কারের দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেন। উপাচার্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

এসময় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আঁখি আলমগীর বলেন, তিনি ফেইক আইডি দিয়ে আমার সঙ্গে বিভিন্ন সময় চ্যাটিং করতেন। শ্রেণিকক্ষে আমার পোশাক নিয়ে বাজে মন্তব্য করে। পরে আমাকে জীবননাশের হুমকিও দেন ওই শিক্ষক। আমি তার বিচার চাই।

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মিরাজ হাসান বলেন, হাফিজ স্যার আমাকে পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও নেশা দ্রব্যের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে৷ পরে আমি রাজি নাহলে তিনি আমার উপর মারাত্মক ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্নভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আতিফা কাফি বলেন, আমি লিখিত অভিযোগ এখনও পাইনি। উপাচার্য স্যার তদন্ত কমিটির আশ্বাস দিয়েছেন। তদন্ত কমিটি পরবর্তী পদক্ষেপ নিবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তারা সকল অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। সেখানে আপনারা সবাই সবার ব্যক্তিগত সমস্যা শেয়ার করবেন। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তীতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল