নিজস্ব প্রতিবেদক:
মোস্তফা-নুরজাহান দম্পতির কোথাও কোনো জমি নেই। তারা বেড়িবাঁধের নিচে খালের পাশে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। মোস্তফা পেশায় রিকশাচালক। বয়স হওয়ায় বেশিরভাগ সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকেন। রিকশা নিয়ে সব সময় বের হতে পারেন না। তাদের তিন ছেলেই বিবাহিত। ছেলেদের সংসারও অভাব-অনটনে ঢেকে আছে। স্ত্রী-সন্তানদের ভরণপোষণও ঠিকমতো দিতে পারছেন না তারা। এতে ছেলেদের দিকে তাকিয়ে না থেকে বৃদ্ধ মোস্তফা-নুরজাহান নিজেদের খাবার নিজেরাই কোনো মতে ব্যবস্থা করে নিচ্ছেন। তবে জরাজীর্ণ ঘরটি মেরামত করার মতো কোনো অবস্থা তাদের নেই। এতে সিমেন্টের বস্তার ত্রিপল দিয়ে ঘরে বেড়া দিয়েছেন। আর চালেও টিনের পরিবর্তে ত্রিপল ব্যবহার করছেন।
ঘরে লাগানো বাঁশসহ কাঠের খুঁটিগুলো বন্যার পানিতে পচে গেছে। ভিটে থেকে মাটিও ধুয়ে গেছে বন্যায়। ঘরে একটি চকি থাকলেও তা পচে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। রাত্রিযাপনের জন্য এখন একমাত্র ভরসা মাটিতে বিছানো একটি পাটি। ঘরে কোনো দরজা নেই। ঘরে ঢুকতেই ভাঙা চালা দিয়ে দেখা মেলে বিস্তীর্ণ আকাশ। আসবাবপত্র বলতে কিছু হাঁড়িপাতিল ছাড়া আর কিছুই নেই।
এমন জরাজীর্ণ পরিস্থিতিতেই ভর করে বেঁচে আছেন লক্ষ্মীপুরের বৃদ্ধ মোস্তফা মিয়া ও নুরজাহান বেগম দম্পতি। তারা জেলা সদরের দিঘলী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব দিঘলী গ্রামের ওয়াপদা বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দা। বন্যায় তাদের ঝুপড়ি ঘরটিতেই প্রায় বুক পরিমাণ পানি ছিল। এতে প্রায় দেড় মাস ঘরের পাশের বেড়িবাঁধের রাস্তার ওপর বসবাস করেছেন তারা। দেখলে মনে হবে তাদের জরীজীর্ণ ঘরটি যেন শূন্যের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
পূর্ব-পশ্চিম দিঘলী গ্রামসহ লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকায় এখনো বন্যার পানিতে ডুবে আছে গ্রামীণ রাস্তা ও বাড়ির উঠান।
সময় জার্নাল/তানহা আজমী