সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বরাদ্দকৃত কক্ষ ব্যবহার করার সুযোগ না পেয়ে মানববন্ধন করেছে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। এতে বিভাগটির শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হাতে, ‘বরাদ্দকৃত কক্ষ ব্যবহারের সুযোগ দিন’, ‘আর নয় প্রতিশ্রুতি, এবার চাই বাস্তবায়ন’, ‘শ্রেনিকক্ষ সংকট দূর হোক, রোদ-বৃষ্টিতে ক্লাস পরীক্ষা চাই না’, ‘স্বাধীন এই বাংলায়-বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে বর্তমানে চারটি ব্যাচের শ্রেণি কার্যক্রম চালু থাকলেও এখনও নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষ নাই বিভাগটিতে। গত ৮ অক্টোবর কলা অনুষদের ডিন বিভাগটিকে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের ৪০৬-৪২৮ এবং ৫২৮নং কক্ষ বরাদ্দ দেন। তবে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এবং ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ উল্লেখিত বরাদ্দকৃত কক্ষ অবৈধভাবে দখলে নিয়ে ক্লাস শুরু করেছে। এমতবস্থায় নিজেদের কক্ষ বুঝে পাওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১৯ সাল থেকে আমাদের বিভাগটি চালু হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ বছরেও আমরা সুনির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষ পাই নাই। আমরা ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ক্লাস-পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। কয়েকদিন আগে কলা অনুষদের ডিন রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে আমাদের কক্ষ বরাদ্দ দিয়েছেন। তবে আমরা এখনও ওই কক্ষগুলো বুঝে পাই নাই। প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি, আমাদের বরাদ্দকৃত কক্ষ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য।
এদিকে কক্ষ দখলে নিয়ে শ্রেনি কার্যক্রম চালুর বিষয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি আতিফা কাফি বলেন, আমরা ঐ রুমে ওঠার পরে রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা রুম ছেড়ে দিতে রাজি আছি। পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে রুমের বিষয়ে যেই সিদ্ধান্ত হবে সেই অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেই সিদ্ধান্ত দিবে আমরা সেটাই মেনে নিবো।
ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী চৌধুরী বলেন, আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বেশকয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমাদের শ্রেণিকক্ষ পাঁচ তলায় স্থানান্তরের জন্য বিভাগের একজন শিক্ষককে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। আমি সুস্থ হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরলেই রুমগুলো ছেড়ে দিয়ে আমার বিভাগকে উপরে স্থানান্তর করবো।
বিষয়টি নিয়ে চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এইচ এম ইসলাম বলেন, আন্দোলনের বিষয়ে কিছু জানি না। তবে দীর্ঘদিন যাবত আমাদের শিক্ষার্থীরা শ্রেনিকক্ষ সংকটে ভুগছে। বর্তমানে চারটি ব্যাচ চলমান রয়েছে। তবে আমাদের একটিও নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষ নেই। হয়তো শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনেই আন্দোলনে গিয়েছে।
এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, সবাইকেই রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারপরেও তারা কেন রুমগুলো দখল করে আছে আমি বুঝতে পারছি না। বিভাগগুলোর সভাপতিদেরকে রুমগুলো ছেড়ে দিয়ে তাদের জন্য বরদ্দকৃত রুমে যাওয়ার জন্য বলেছিলাম। এখন তারা না শুনলেতো আমার কিছু করার নেই। এ বিষয়ে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিবে। উপাচার্যের সাথে আমার কথা হয়েছে। উনি শক্তভাবে জানিয়েছেন যে কোনো ধরনের দখলদারি চলবে না।
এমআই