শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

উত্তপ্ত পৃথিবী-শীতল করবে কে

সোমবার, নভেম্বর ৪, ২০২৪
উত্তপ্ত পৃথিবী-শীতল করবে কে

প্রযুক্তি ডেস্কঃ  

কিন্তু হঠাৎ পৃথিবীর উত্তাপ কেন ঊর্ধ্বমুখী হলো? 
আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম তাপমাত্রা রেকর্ড করা শুরু হয় ১৮৫০ সালে। সেই শুরুর সময় থেকে নিকট অতীত ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২৩ সাল ছিল পৃথিবীর ইতিহাসের উষ্ণতম বছর। এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাসাগরীয় ও বায়ুমণ্ডলীয় প্রশাসন (এনওএএ), মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসাসহ পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সংস্থা।গবেষকেরা বলছেন, তাপমাত্রায় ২০২৩–কেও ছাড়িয়ে যেতে পারে ২০২৪। এ ধারণা যে অমূলক নয়, তা বছরের প্রথম দিকে অর্থাৎ জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেই খানিকটা আঁচ পাওয়া গেছে।

পৃথিবী উত্তপ্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণগুলো মনুষ্যসৃষ্ট, বিশেষ করে শিল্পবিপ্লবের উপজাতক হিসেবে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন ও জলবায়ু পরিবর্তন। এ ছাড়া ‘এল নিনো’ও একটা কারণ। এল নিনো এমন এক প্রাকৃতিক ঘটনা, যা প্রতি দুই থেকে সাত বছর অন্তর ঘটে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এল নিনোর কারণে মানবসৃষ্ট বৈশ্বিক উষ্ণতা অস্থায়ীভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। 


শীতল করবে কে ?
তাই এবার এই উত্তপ্ত পৃথিবী-শীতল করবে সিনথেটিক ডায়মন্ড ডাস্ট বা হীরার ধূলিকণা। এমনটিই প্রস্তাব দিয়েছেন একদল বিজ্ঞানী।

নতুন এ প্রস্তাবের আওতায় প্রতিবছর পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলে লাখ লাখ টন হীরার ধূলিকণা ছড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এতে পৃথিবীর তাপমাত্রা কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স জার্নালে বিজ্ঞানীদের এই ভাবনার কথা প্রকাশিত হয়েছে।

অযৌক্তিক মনে হলেও ‘জিয়োফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুযায়ী, বছরে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়া বিশ্বের তাপমাত্রা অনেকাংশেই কমিয়ে দিতে পারে। চকচকে হীরার গুঁড়া সূর্যরশ্মির ওপর পড়লে তা অনেকাংশেই প্রতিফলিত হয়ে বায়ুমণ্ডলের বাইরে চলে যাবে। ফলে তাপও কমবে। এই ধারণার কথাই প্রকাশিত হয়েছে ওই গবেষণাপত্রে।
 
এই প্রক্রিয়া যদি ৪৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, তবে গবেষকদের বিশ্বাস পৃথিবীকে প্রায় ২.৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট ঠাণ্ডা করা যেতে পারে। এর জন্য ২০০ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে। তবুও, গবেষকরা যুক্তি দিয়েছেন এই সমাধান নিয়ে  বিবেচনা করা মূল্যবান। কারণ আমরা ক্রমবর্ধমানভাবে ভয়াবহ জলবায়ু সংকটের মুখোমুখি। অধ্যয়নের আসল লক্ষ্য জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সমস্ত সম্ভাব্য পরীক্ষা করে দেখা। এমনকি সেগুলো অবাস্তব বলে মনে হলেও। 

এই পদ্ধতিটি সৌর জিওইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রের অধীনে পড়ে। বিশেষত, স্ট্রাটোস্ফিয়ারিক এরোসল ইনজেকশন নামক একটি কৌশল। ধারণাটি সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করতে এবং তাপ শোষণকে হ্রাস করতে ওপরের বায়ুমণ্ডলে হীরার ক্ষুদ্র কণাকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। হীরার ধূলিকণার পাশাপাশি, গবেষকরা সালফারসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি অ্যারোসলের প্রভাবের মডেল তৈরি করেছেন, কোন উপাদানগুলো বাস্তব-বিশ্বের পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে তা নির্ধারণ করতে।
 
অ্যারোসোলগুলো সূর্যের আলোকে কতটা ভালোভাবে প্রতিফলিত করে এবং কতক্ষণ বায়ুতে ভেসে থাকতে পারে তা দেখা হচ্ছিল পরীক্ষার মাধ্যমে। পাশাপাশি কোন ধূলিকণা তাড়াতাড়ি জমাট বাঁধছে, তা-ও পরীক্ষা করে দেখা হয়।
 
ওই গবেষণাপত্র অনুযায়ী, প্রাথমিক স্তরের ওই পরীক্ষায় সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া গেছে হীরার ধূলিকণায়। গবেষকরা জানিয়েছেন, হীরার কণাগুলো জমাট বাঁধা প্রতিহত করে এবং সবচেয়ে বেশিক্ষণ উঁচুতে ভেসে থাকতে সক্ষম হয়েছে। অন্যান্য অ্যারোসোল অ্যাসিড বৃষ্টিতে পরিণত হলেও হীরার ধূলিকণা তা এড়িয়ে গেছে। সালফার ক্লাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় নিকৃষ্ট প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও একটি আরও ব্যবহারিক বিকল্প রয়েছে।
 
গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্নেল ইউনিভার্সিটির প্রকৌশলী ডগলাস ম্যাকমার্টিন ব্যাখ্যা করেছেন যে, সালফারের ক্রয়ক্ষমতা এবং স্থাপনের সহজতা এটিকে আরও সম্ভাব্য করে তোলে। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতগুলো বায়ুমণ্ডলে সালফার কণাগুলো কীভাবে আচরণ করে সে সম্পর্কে বাস্তব-বিশ্বের অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছে। বিজ্ঞানীদের বৃহৎ আকারের জলবায়ু হস্তক্ষেপের জন্য এর উপযুক্ততার বিষয়ে আস্থা দিয়েছে। যেহেতু সালফার একটি গ্যাস, এটি হীরার ধূলিকণার জন্য প্রয়োজনীয় ভারী পেলোডের বিপরীতে বিমান থেকে সহজেই বাতাসে মুক্ত করা যেতে পারে।

যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই ধরনের পরীক্ষা করার আগে পৃথিবীতে তার পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব কতোটা পড়বে তা দেখে নেয়া প্রয়োজন। 

তানহা আজমী


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল