নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
নূর মোহাম্মদ। বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলার গোল্লাপাড়া গ্রামে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন।শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো সনদ নেই, তবে তাঁর আছে ধান নিয়ে নতুন নতুন উদ্ভাবনের কৃতিত্ব।
বরেন্দ্রভূমিতে প্রায় প্রতিবছরই খরায় নষ্ট হয়ে যায় ধান। সেই ধান রক্ষা করতেই কাজে লেগে যান তিনি। নিজের মাটির ঘরটাকে বানিয়ে ফেলেন গবেষণাগার। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান হেলাল উদ্দিনের সাহচর্য পান নূর মোহাম্মদ। সেখানে হাতেকলমে শেখেন অনেক কিছু।
এ পর্যন্ত সংকরায়ণের পর নূর মোহাম্মদের কৌলিক সারির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই শতাধিক। এগুলোর মধ্যে চার-পাঁচটি ধান জাত হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এর আগে তিনি খরাসহিষ্ণু, সুগন্ধি ও স্বল্পজীবনকালের ধান উদ্ভাবন করেছেন।
এবার দেশের সবচেয়ে চিকন ধান উদ্ভাবনের দাবি নূর মোহাম্মদের। গত ছয় বছরের গবেষণায় তিনি এই ধান উদ্ভাবন করেছেন।
নূর মোহাম্মদ বলেন, দেশের কোনো চিকন ধান বিঘায় ১০-১২ মণের বেশি হয় না। তাঁর উদ্ভাবিত নতুন এই ধানের গড় ফলন হবে বিঘায় প্রায় ২১ মণ। আমন ও বোরো এ দুই মৌসুমেই এই ধান চাষ করা যায়। তবে বোরো মৌসুমে ফলন বেশি। তিনি বলেন, দেশের সবচেয়ে চিকন ধান পোলাওর জন্য চিনিগুঁড়ার মতোই তাঁর ধান চিকন কিন্তু চিনিগুঁড়ার চেয়ে লম্বা। সুগন্ধি না হলেও এই ধানের ভাত খেতে ভালো লাগবে।
সংকরায়ণের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করছেন তিনি। স্বশিক্ষিত এই বিজ্ঞানীর কাজ আমলে নিয়েছে খোদ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরাও। এসব জাত এখন স্বীকৃতির অপেক্ষায় আছে। নূর মোহাম্মদ নামের এই ব্যক্তি এবার মালয়েশিয়ায় কৃষক-বিজ্ঞানী সম্মেলনে ডাক পেয়েছেন। এ উদ্দেশে তিনি গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া রওনা হন।
মালয়েশিয়ার পেনাং শহরে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে পেস্টিসাইড অ্যাকশন নেটওয়ার্ক এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক (প্যানাপ)। স্থানীয় একটি হোটেলে ৬ থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এ সম্মেলন। ১০ নভেম্বর পর্যন্ত নূর মোহাম্মদ সেখানে থাকবেন। ওই সম্মেলনে যেতে সহযোগিতা করেছে গবেষণা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ (বারসিক)।
তানহা আজমী