এম পলাশ শরীফ, বাগেরহাট:
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ এর প্রাক্কালে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির তীব্র সংকট মোকাবেলায় মোংলায় পানিতে নিমজ্জিত পরিবার ”বাড়ছে জোয়ার; জাগ্রত কন্ঠস্বর” শিরোনামে অভিনব কর্মসুচি পালিত হয়েছে।
১০ নভেম্বর রবিবার সকালে মোংলার দক্ষিণ কাইনমারির পশুর নদের পাড়ে বৈশ্বিক সচেতনতা এবং স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সাথে সংহতি রাখার অনুপ্রেরণামূলক প্রয়াসে মোংলা নাগরিক সমাজ (এমএনএস), কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ক্লিন), এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট যৌথভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রচারাভিযানের আয়োজন করে। প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির তীব্র সংকটকে কেন্দ্র নদীর পানিতে নিমজ্জিত বাড়ির পরিবারের শিশুরা ব্যানার পেস্টুন হাতে নিয়ে অভিনব প্রতিবাদ জানায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সংকট এই অঞ্চলের জীবন-জীবিকা বিপন্ন করছে।
রবিবার সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত অভিনব প্রতিবাদ কর্মসুচিতে সভাপতিত্ব করেন মোংলা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক পরিবেশযোদ্ধা মোঃ নূর আলম শেখ। এসময়ে প্রতিাবাদ কর্মসুচিতে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক নেতা নাজমুল হক, বিদ্যুৎ মন্ডল, পরিবেশকর্মী কমলা সরকার, চন্দ্রিকা মন্ডল, তন্বী মন্ডল, মোঃ রহমত শেখসহ পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ ও ছাত্র-তরুন।
অভিনব এই কর্মসুচিতে বক্তারা বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও ঝুঁকির উপর জোর দেন। প্রচারাভিযানটি এমন সময়ে অনুষ্ঠিত হয় যখন জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় এবং লবণাক্ত পানির অনুপ্রবেশের মতো সমস্যাগুলি উর্বর জমিকে ধ্বংস করে ফেলছে এবং স্থানীয় জনগণকে বিকল্প জীবিকার সন্ধানে চলে যেতে বাধ্য করছে। প্রতিবাদ কর্মসুচিতে বক্তারা বলেন বাংলাদেশ বৈশ্বিক নির্গমনে নগণ্য অবদান রাখা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মোংলা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক বলেন “মোংলা জলবায়ু সংকটের সম্মুখভাগে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “আমাদের এলাকাবাসী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভুক্তভোগী। আজ মোংলার নাগরিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করছে। কপ২৯-এর পূর্বে আমরা আমাদের আওয়াজ তুলছি, যাতে বিশ্বনেতারা উপলব্ধি করেন যে আমাদের জন্য সময় দ্রুত শেষ হয়ে আসছে।”
উল্ল্যেখ্য মোংলা নাগরিক সমাজের এই উদ্যোগটি কপ২৯-এর আগে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে আয়োজন করা হয়েছে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের সরকার এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে উপকূলীয় অভিযোজনের জন্য তহবিল বরাদ্দ, দুর্যোগ প্রতিরোধী অবকাঠামো নির্মাণ এবং জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার আবেদন জানান।
সময় জার্নাল/এলআর