নিজস্ব প্রতিনিধি:
নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ চার বছর হতে পারে। কারণ জনগণ দ্রুত এগিয়ে যেতে চায়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন।
বর্তমান অন্তবর্তী সরকার দ্রুততম সময়ের নির্বাচন দিতে চায় বলে মন্তব্য করলেও তিনি এর নির্দিষ্ট সময়সীমা জানাননি তিনি। তবে তিনি নিজে নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে তার যেমন বন্ধু আছে, রিপাবলিকান পার্টিতেও তার বন্ধু আছে। ফলে তাদের সাথে কাজ করতে কোনো সমস্যা হবে না।
আল জাজিরাকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। গতকাল রোববার সাক্ষাৎকাটি প্রকাশ করা হয়। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুকে জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে তিনি এ সাক্ষাৎকার দেন। তিনি এই সাক্ষাতকারে সংস্কার, জলবায়ু, ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে জানতে চাইছি, তোমরা কি এখনই নির্বাচনে যেতে চাও নাকি এসব সংস্কার শেষ করা হোক তা চাও।’ সব কিছু জনগণের সাথে, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শ করে তাদের মতামতের ভিত্তিতেই হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ড. ইউনূস আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে তার এ ধরনের কোনো ইচ্ছা নেই। তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তিনি রাজনীতিক নন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়সীমার ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকার পাঁচ বছরের হয়। নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ মানুষ সরকারের মেয়াদ কম চায়। সুতরাং এটা (অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ) চার বছরের কম হওয়া উচিত, এটা নিশ্চিত। এটা আরো কম হতে পারে। এটা পুরোটা নির্ভর করছে মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার ওপরে।’
সাক্ষাৎকারে ভারতে পলাতক শেখ হাসিনা সম্পর্কেও কথা বলেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, হাসিনা ভারত থেকে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। ভারতকে এ বিষয়ে বাংলাদেশের উষ্মার কথা জানানো হয়েছে। ড. ইউনূস জানান, হাসিনাকে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, হাসিনা নিজেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভাবতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যানের অভিযোগ সম্পর্কেও কথা বলেন তিনি। নির্যাতন কমে আসছে বলেও জানান তিনি। বলেন, যাদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে তারা সংখ্যালঘু বলে নির্যাতিত হচ্ছে না। তাদের ওপর নির্যাতনের কারণ তারা সবাই আওয়ামী লীগ করতেন। বেশিভাগ হিন্দুই আওয়ামী লীগ করে। মানুষ আওয়ামী লীগের ওপর ক্ষুব্ধ। বাংলাদেশে ব্যাপক সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ ভারতের গণমাধ্যমের প্রপাগান্ডা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তিনি বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে এখানে সেখানে কিছু প্রকল্প নিলেই এ সংকটের সমাধান হবে না। এ সমস্যা রোধে মানুষের জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি বলেন, ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে যেমন তার বন্ধু আছে, রিপাবলিকান পার্টিতেও তার বন্ধু আছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের পররষ্ট্রনীতি হঠাৎ করে পরিবর্তন হয় না। ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় তার কাজ করতে কোনো সমস্যা হবে না।
সময় জার্নাল/এলআর