সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডর ঘুষ লেনদেনসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুদকের অভিযান

রোববার, জানুয়ারী ১২, ২০২৫
দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডর ঘুষ লেনদেনসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুদকের অভিযান

মাহবুবুল হক খান, দিনাজপুর প্রতিনিধি: 

দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে  অডিটের সময় ঘুষ লেনদেনসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের) কর্মকর্তারা।

রবিবার (১২ জানুয়ারি ২০২৫) সকাল ১১টায় অভিযান শুরু করে বিকেল ৪টায় অভিযান শেষ করে। অভিযানের নেতৃত্ব দেয় দুদক দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ ইসমাইল হোসেন।

অভিযানে অডিটের সময় ঘুষ লেনদেনসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রমান পেয়েছেন দুদক। এ সময় বিভিন্ন নথিপত্র জব্দ করে দুদক কর্মকর্তারা।

গত ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে অডিট দল তাদের নিরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এই নিরীক্ষা চলাকালে বোর্ডের নানা অনিয়ম ঢাকতে অডিট দলকে সাড়ে ২১ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ একটি সরকারি ব্যাংক থেকে শারমিন আক্তার রুম্পা নামের এক নারীর ব্যাংক হিসাবে ওই সাড়ে ২১ লাখ টাকা জমা হয়। ব্যাংক হিসাবে শারমিন আক্তার রুম্পার ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা।

শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৫ আগস্ট পত্রিকায় দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মূল উত্তরপত্র, অতিরিক্ত উত্তরপত্র, ব্যবহারিক উত্তরপত্র (কভারসহ), বহু নির্বাচনী ও ওএমআর শিটসহ মোট ১ কোটি ৮০ লাখ খাতা কেনার দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র দাখিল করেছিল মাস্টার সিমেক্স পেপার লিমিটেড, প্রিন্ট মাস্টার প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, বাংলাদেশ মনোস্পোল পেপার লিমিটেড এবং এলিট প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ২১ কোটি ২৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকায় কার্যাদেশ পায় মাস্টার সিমেক্স পেপার লিমিটেড। এর মধ্যে ১০ শতাংশ কমিশন দিতে হয়েছে বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। 

২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খাতা সরবরাহ করে এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে বিল উত্তোলন করে।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের তিনতলা ভবনটিতে বর্তমানে তিল পরিমান জায়গা ফাঁকা নেই। এসব খাতা আগামী চার বছরেও শেষ হবে না। এসব খাতা পড়ে থেকে থেকে লেখার উপযোগিতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এসব অনিয়মের সঙ্গে শিক্ষাবোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা জড়িত বলে শিক্ষাবোর্ডের সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে। 

এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (১২ জানুয়ারি ২০২৫) দুদক দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে অভিযান পরিচালনা করেন। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় তারা বিভিন্ন নথি যাচাই বাচাই ও পর্যবেক্ষণ করেন। তারা ঘুষ লেনদেনের কিছু নথিপত্র জব্দ করেন। দুদকের দলটি ঘুষ লেনদেনসহ খাতা ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগের প্রমাণ পান। এ ছাড়া আরও অনিয়ম রয়েছে বলে জানান দুদকের দলটি।

দুদক দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ইসমাইল হোসেন জানান, আমরা দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে সম্প্রতি অডিট দলের নিরিক্ষার সময় ঘুষ লেনদেনের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করি। এসময় আমরা সাড়ে ২১ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। খাতা ক্রয়ের অনিয়ম আমাদের কাছে দৃশ্যমান হয়েছে। রয়েছে অনেক অনিয়ম। 

তিনি আরো বলেন, অভিযানের সময় আমরা কিছু নথিপত্র জব্দ করেছি। এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ ব্যাপারে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডর চেয়ারম্যান স ম আব্দুস সামাদ বলেন, পাঁচ বছরের খাতা কেনা হয়েছে অভিযোগটি সঠিক নয়। এক বছরের খাতা কেনা হয়েছে। যার প্রমাণ আমরা দুদককে দেখিয়েছি।আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি আমার জানা নেই। এই লেনদেনের সঙ্গে আমার বা আমার অফিসের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। যিনি লেনদেন করেছেন এবং যার একাউন্টে টাকা জমা হয়েছে তিনিই দায়ি। আমার অফিসের কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল