সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. জহুরুল ইসলামের সাথে শিক্ষাছুটি নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। গবেষণা কাজে বিদেশে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় মেয়াদে ছুটি বৃদ্ধি একটি রুটিন ওয়ার্ক হলেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার ছুটি বৃদ্ধির আবেদন বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওই অধ্যাপকের। বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাত ১০ টায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ড. জহুরুল অভিযোগ করেন, ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ডেকোটায় ২ বছরের এমএস ডিগ্রিতে ভর্তির জন্য ২০২৩ সালের ১৭ মে ইবির ছুটি বিধির ২০(ক) এর ১, ৪ ও (ঘ) ধারা অনুযায়ী ১ বছরের জন্য সবেতনে শিক্ষা ছুটির আবেদন করেন তিনি। তখন স্ট্যান্ডিং কমিটি তার পিএইচডি ডিগ্রি থাকায় এম.এস ডিগ্রির জন্য ছুটি অনুমোদন করেনি। পরে তিনি ১ বছরের জন্য স্যাবাটিক্যাল লিভের জন্য আবেদন করলে ঐ বছরের ৩০ জুলাই কর্তৃপক্ষ তা মঞ্জুর করে। পরবর্তীতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রজেক্টে রিসার্চ অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত হওয়ায় ঐ বছরের ৯ আগস্ট স্যাবাটিক্যাল লিভের পরিবর্তে ছুটি বিধির ২০(৭) ধারা অনুযায়ী সবেতনে শিক্ষা ছুটির আবেদন করেন এবং ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট হতে ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত তার ১ বছরের সবেতনে শিক্ষা ছুটি মঞ্জুর হয়।
পরে ২০২৪ সালে ২৭ জুলাই নিয়ম অনুযায়ী চলমান শিক্ষা ছুটির ১ বছর মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য তিনি আবেদন করেন। আবেদনের ২ মাসের বেশী সময় পরে তাকে পত্র দিয়ে ছুটি মঞ্জুর হয়নি মর্মে জানানো হয় এবং ১ মাসের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়। পরে গত ৩০ অক্টোবর তিনি বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য আবেদন করলে উপাচার্য বিষয়টি স্ট্যান্ডিং কমিটির এজেন্ডাভূক্ত করেন। কিন্তু গত ৯ ডিসেম্বর উপ-উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তার আবেদন আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তার। এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি মিটিং এর চেয়ার থেকেই এরূপ ভাষ্য দেওয়া হয়েছে যে, এটা একটা অবৈধ ছুটি, কীভাবে এই ছুটি দেওয়া হলো তা তদন্ত করতে হবে এবং যারা ছুটি দিয়েছেন তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনা হবে। এছাড়া তাকে অবগত না করেই গত বছরের অক্টোবর থেকে তার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ড. জহুরুল ইসলাম বলেন, গবেষণার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে ইবি কর্তৃপক্ষের কাছে সব নথি জমা দেওয়া হয়েছে। যদিও পূর্বে অনুমোদিত অধ্যয়ন ছুটি বৃদ্ধিযোগ্য প্রক্রিয়াটি রুটিন ওয়ার্ক, তবে এর সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটি তা অস্বীকার করে এবং এক মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসার জন্য আমাকে নোটিশের আদেশ দেয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ৫ বছরের সবেতনে শিক্ষা ছুটির সুবিধা পেয়ে থাকেন। কিন্তু আমার মাত্র ১ বছর ছুটি ভোগ যেন বিশাল অন্যায় হয়ে গেছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত ছিল বিদেশে উচ্চশিক্ষাকে উৎসাহিত করা। আমার বেতন বন্ধ করে দেওয়ার কারণে আমার পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খন্দকার তৌহিদুল আনাম বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না, আমি এমন কিছুই শুনিনি।
উপ-উপাচায অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, 'কোন নিয়মে তার শিক্ষাছুটি বাতিল করা হয়েছিল তা আমি মনে করতে পারছি না। অফিস চলাকালীন ফাইল চেক করার পর আমি নিশ্চিত করতে সক্ষম হব। তার সঙ্গে কোনো অন্যায় হলে উপাচার্যের কাছে যথাযথভাবে অভিযোগ জানাতে হবে। তিনি যোগ্যতা অর্জন করলে তা আবার সিন্ডিকেটের কাছে নেওয়া হতে পারে।'
এমআই