সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত থানা (ইবি থানা) অন্যত্র স্থানান্তর না করার দাবিতে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে থানা ও উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে মানববন্ধন শুরু হয়। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মী এবং স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের নেতৃবৃন্দসহ এলাকাবাসী অংশ নেয়। এসময় তারা ক্যাম্পাস ও এলাকাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে থানা স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। পরে মানববন্ধন শেষে তারা ফটক সম্মুখে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ার জ¦ালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে দুপুর ২টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্র্থ) পলাশ কান্তি নাথ এসে সমাধানের আশ্বাস দিলে সড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে বিক্ষোভকারীরা আগামী দুদিনের মধ্যে থানা স্থাপন ও স্থানান্তরের যাচাইবাছাই সংক্রান্ত প্রতিবেদন স্বরাষ্ট মন্ত্রানালয়ে জমা দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ফের সড়ক অবরোধ করার হুঁশিয়ারি দেন।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের দাবি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহর থেকে দূরে ও প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ইবি থানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কাছাকাছি কোন থানা না থাকায় ইবি থানা সরিয়ে নিলে শিক্ষার্র্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। তাই আমরা চাই ইবি থানা ইবিতেই থাকবে।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, সকলের মতামতকে উপেক্ষা বিগত স্বৈরাচার সরকার ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ইবি থানা স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা ইবি থানা অন্য কোথাও স্থানান্তরের ষড়যন্ত্র মেনে নিবো না। প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করবো।
ইবি থানা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি স্থানীয় তৌহিদুল হাসান লাবু বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতেই থানা স্থানান্তরের ষড়যন্ত্র করেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। আমরা সেই সিদ্ধান্ত মানি না। যে আল্টিমেটাম দিয়েছি এর মধ্যে যদি বিষয়টি সমাধান না করা হয় ফের সড়ক অবরোধ করা হবে।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, থানা স্থানান্তর নিয়ে একটি কমিটির পর্যবেক্ষণ চলছে। পর্যবেক্ষণ শেষে প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রানালয়ে জমা দেওয়া হবে। আশা করছি দুই এলাকার জন্যই ভালো কিছু আসবে।
প্রসঙ্গত, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী সাতটি ইউনিয়নে কাজ করে। ২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে থানাটিকে ক্যাম্পাস থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে ঝাউদিয়া এলাকায় স্থানান্তর করে ‘ঝাউদিয়া থানা’ নামকরণ এবং ঝাউদিয়ায় থাকা পুলিশ ক্যাম্পকে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।
এমআই