সময় জার্নাল ডেস্ক:
আইকিউএয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নগর হিসেবে দূষণের দিক থেকে ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। এ নগরের বায়ুতে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ছিল ৭৮ মাইক্রোগ্রাম। ২০২৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ৮০ দশমিক ২ মাইক্রোগ্রাম। এ তালিকায় শীর্ষে থাকা নয়াদিল্লির বাতাসে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ৯১ দশমিক ৮। ২০২৩ সালে তা ছিল ৯২ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ সর্বোচ্চ দূষিত এ নগরীরও বায়ুর মান কিছুটা হলেও উন্নত হয়েছে।
এবার ঢাকা এবং সার্বিকভাবে বাংলাদেশেরও বায়ুর মান ৭৮। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয় যে দূষণ বিস্তৃত হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মো. জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমরা দূষণ রোধে চেষ্টা করছি, কিন্তু কিছু উৎস নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যেমন আন্তসীমান্ত বায়ুপ্রবাহ। আবার ইটভাটার দূষণ, শুকনা মৌসুমে পাতা পোড়ানোর মতো বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’
স্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব
বায়ুদূষণ মানব স্বাস্থ্যের প্রতি একটি বড় হুমকি। ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ বায়ুদূষণ। আর পাঁচ বছরের নিচের বয়সী শিশুদের মৃত্যুরও দ্বিতীয় কারণ এটি। বাংলাদেশেও দূষণে ক্ষতি কম নয়।
বিশ্বব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১৯ সালে বায়ুদূষণসহ চার ধরনের পরিবেশদূষণে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বায়ুদূষণের কারণে। এ ছাড়া দূষণের কারণে ওই বছর দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন বলেছেন, বায়ুদূষণ যে জনস্বাস্থ্যের একটি বড় বিষয়, সেই উপলব্ধি সরকারের মধ্যে নেই। সেই উপলব্ধি যত দিন পর্যন্ত না আসবে, তত দিন উন্নতি হওয়া সম্ভব নয়।
বায়ুদূষণ শুধু নাগরিক জীবনে স্বাস্থ্যগত সমস্যাই তৈরি করে না। এর মাধ্যমে এই দেশ এবং নগর সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণারও সৃষ্টি হয় বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম। গতকাল প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বায়ুদূষণ বিনিয়োগ ও পর্যটনের মতো খাতেও প্রভাব ফেলে। দূষণ রোধে সরকারি যেসব তৎপরতা আছে, সেগুলো কার্যকর নয়। পরিস্থিতির উন্নতি করতে হলে সঠিক পরিকল্পনার ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
সময় জার্নাল/টিএ