নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে বালুমহাল ইজারার দরপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের দোতলায় এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে তা কার্যালয়ের সামনের সড়ক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে মো. রায়হানুল ইসলাম ওরফে রাকিব নামের এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তিনি নগরের রাজপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রায়হান জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শামীম সরকারের সঙ্গে দরপত্র জমা দিতে এসেছিলেন। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল বেলা একটা। সময় পেরিয়ে যাওয়ায় তাঁরা দরপত্র জমা দিতে পারেননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজশাহীর বালুমহালগুলো ইজারার দরপত্র (টেন্ডার) দাখিলের শেষ সময় ছিল আজ বেলা একটা। টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল ডিসি অফিসের দোতলায় এসএ শাখার সামনে। বেলা একটার পর শামীম সরকারের সঙ্গী রাহুল ইসলাম দরপত্র দাখিল করতে গেলে পুলিশ এবং আগেই যাঁরা দরপত্র দাখিল করেন, তাঁরা বাধা দেন। ফলে শামীম সরকার দরপত্র জমা দিতে না পেরে তাঁর লোকজন নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এরপর নগরের গুড়িপাড়া এলাকা থেকে দরপত্র দাখিল করতে আসেন শহীদ হাজি, জহুরুল, নাজির, টিয়া, নুরু, ফারুকসহ কয়েকজন। তাঁরা নির্ধারিত সময়ের পরও জোর করে দরপত্র বাক্সে ফেলে দেন। এ সময় ছাত্রদলের নেতা শামীম সরকারের পক্ষের লোকজন বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তাঁদের এখন দরপত্র দাখিল করতে দিতে হবে বলে দাবি তোলেন। তখন গুড়িপাড়ার ওই লোকজনের সঙ্গে শামীমের লোকজনের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসএ শাখার সামনেই শামীমের সঙ্গে আসা রায়হানকে পেটানো হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ডিসি অফিসের সামনে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের নেতা শামীম সরকার বলেন, সকালে একটি দরপত্র ফেলেছিলেন। বাঘার লক্ষ্মীনগর ঘাটের। তিনি সেটা পেয়েছেন। পরে রায়হানুল ইসলাম ওরফে রাকিব শ্যামপুর ঘাটের জন্য দরপত্র ফেলতে গিয়েছিলেন। তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর ওপরে হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় তিনি ওই ভবনেই ছিলেন। ভেতরে যাননি।
সময় পার হয়ে যাওয়ার পর যাওয়া প্রসঙ্গে শামীম বলেন, তখনো দুই মিনিট সময় ছিল। সিসিটিভির ফুটেজ দেখলে প্রমাণ পাওয়া যাবে। আসলে সেটা নয়, পাঁচ মিনিট আগে থেকেই তাঁরা ওখানে জটলা করে বলছিলেন সময় শেষ, সময় শেষ। আসলে তাঁরা ফেলতে দেবেন না।
তাঁরাও তো বিএনপি, কেন তাঁদের সঙ্গে বিরোধ-জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদল সভাপতি শামীম বলেন, তাঁরাও বিএনপি, ঠিক আছে, কিন্তু তাঁদের সঙ্গে হাইব্রিড বিএনপিও ছিল। তাঁরা আওয়ামী লীগের ঠিকাদার ছিলেন। তিনি বলেন, হামলায় রায়হানুল আহত হয়েছে, কিন্তু তাঁর জানা মতে, অপর পক্ষের কেউ আহত হননি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহা. যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘মারামারির ঘটনা দেখেছি। তবে কী কারণে সেটা ঘটেছে, তা বলতে পারব না।’ নির্ধারিত সময়ের পরও দরপত্র বাক্সে ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ রকম তো আমাকে কেউ বলেনি।’
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, দরপত্র ফেলতে বাধা দেওয়া ও হামলার করা হয়েছে জানিয়ে রায়হানুল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সেটা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সময় জার্নাল/টিএ