সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী,বাকৃবি প্রতিনিধি:
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নের্তৃবৃন্দদের নিয়ে আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল আয়োজন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সাংবাদিক সমিতি (বাকৃবিসাস)। ৮টি ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক ছাদের নিচে বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির ইফতার মাহফিলে অংশ নেয়।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সভাকক্ষে বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে মুক্ত আলোচনা সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আমান উল্লাহ এর সঞ্চালনায় ও সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান রনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, কোষাধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. হেলাল উদ্দীন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার, সোনালী দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আহমেদ খায়রুল হাসান, সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ এবং সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. সোনিয়া সেহেলি এবং অধ্যাপক ড. কাজী ফরহাদ কাদির। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলামসহ সাংবাদিক সমিতির সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ।
এসময় ক্রীড়াশীল ছাত্র সংগঠনের মধ্যে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বাকৃবি শাখার আহবায়ক মো. আতিকুর রহমান ও সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম শফিক, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবু নাসির ত্বোহা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক জায়েদ হাসান ওয়ালিদ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) সভাপতি নিশাত আনজুম মিথিলা, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, গ্রীণ ভয়েসের সভাপতি মো. বকুল আলী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক আজিজুল হক আজিজসহ অন্যান্য নের্তৃবৃন্দ।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি চালুর জন্যে রাজনীতি বন্ধের প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে হবে। এতে স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ তৈরি হবে। রাজনীতি বন্ধ কোনো সমাধান নয়। একটি বিষয় সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, আমরা ফ্যাসিবাদ দমন করতে গিয়ে যেন ফ্যাসিস্ট না হয়ে যায়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বাকৃবি শাখার আহবায়ক আজিজুল হক আজিজ বলেন, ‘ক্যাম্পাসে কোনো দূর্নীতি ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। ছাত্রসমিতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি দিতে হবে। না হলে আমরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করবো।’
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আবু নাসির ত্বোহা বলেন, ‘আমরা সুন্দর ক্যাম্পাসের স্বপ্ন দেখি। এখানে র্যাগিং, মাদক, গেস্টরুমসহ কোনো ধরণের জুলুম ও নির্যাতন থাকবে না। সবাই মিলে সম্প্রীতির ক্যাম্পাস গড়ার অঙ্গীকার।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বাকৃবি শাখার আহবায়ক মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘আজকের এই ইফতার মাহফিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি একটি মিলনমেলা। আমরা একসঙ্গে বসে ইফতার করছি, আলাপ করছি, পারস্পরিক বন্ধন আরও দৃঢ় করছি। এই রমজানের বার্তা হচ্ছে সংযম, সহমর্মিতা আর মানবিকতা—এই চেতনার আলোই ছড়িয়ে দিচ্ছেন আপনারা ক্যাম্পাসে।অনেক সময় বিপদসংকুল পরিবেশেও কাজ করতে হয় আপনাদের। তারপরও সাহস হারান না। সত্য আর ন্যায়ের পক্ষে থাকেন। এজন্য আপনাদের আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান রনি বলেন, ‘সকল ছাত্রসংগঠনই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে। তাই পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব। সাংবাদিক সমিতির এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সকল সংগঠনের মধ্যে সৌহার্দ্য ও ঐক্য তৈরি করা।’
বাকৃবির ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, ‘সাংবাদিক সমিতিকে ধন্যবাদ এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার জন্যে। সকল সংগঠনের নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এক হয়ে কাজ করার। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়ন বাস্তবায়ন সম্ভব।’
সময় জার্নাল/টিএ