মো: এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজ মালিকীয় ভূমিতে নির্মাণকাজ চলমান অবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য জয়নাল আবেদীন ও তাঁর প্রতিবন্ধী পুত্রের উপর একাধিকার হামলার অভিযোগ করেছেন। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে ভূমিদস্যু মোশারফ ও তার ৫ ছেলের অব্যাহত হামলা ও হুমকি থেকে বাঁচতে প্রাণভয়ে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, জয়নাল আবেদীন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। মুন্সীরহাট ভূমি অফিসের আওতাধীন হাড়ীমুড়া মৌজার বিএস চুড়ান্ত ৩৮নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক আবদুল হামিদ। ওই খতিয়ানের ৪৫৫ দাগে ৩২শতক, ১৮৪ দাগে ৫৬শতকসহ মোট ৮৮শতক ভূমিতে ৩ পুত্র ওয়ারীশ রেখে মারা যায়। মৃত আব্দুল হামিদের ওয়ারীশপুত্র খোরশেদ আলম ওয়ারীশসূত্রে মালিক হয়ে ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ ৮১১নং হেবার ঘোষনাপত্র মুলে হাল ৪৫৫ দাগে ১৪.৫৫শতাংশ ভূমি তার পুত্র কামরুল ইসলামকে প্রদান করে। কামরুল ইসলাম দলিলমূলে নামজারী ও জমাখারিজ মোকদ্দমা নং- ১০,১০৩/২০২১-২২মূলে সৃজিত ২৩৯নং খতিয়ানে ৪৫৫ দাগে ১০.৬৬শতাংশ ভূমি নিজ নামে খতিয়ান করে। পরবর্তীতে কামরুল ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর ৯২০৮নং সাফকবলা দলিলমূলে বিএস চুড়ান্ত ৪৫৫ দাগে ১০.৬৬শতাংশ ভূমি জয়নাল আবেদীনের ছেলে শাহাদাত ও আনোয়ারের নিকট বিক্রি করে মালিকানা হস্তান্তর করে ও দখল বুঝাইয়া দেয়। জয়নাল আবেদীনের ছেলেরা ১০.৬৬শতাংশ ভূমিতে মালিক হয়ে নামজারী ও জমাখারিজ মোকদ্দমা নং-৬,০৮৭/২০২৩-২৪ মূলে সৃজিত ২৯৩নং খতিয়ানে ৪৫৫ দাগে ১০.৬৬শতাংশ ভূমি নিজ নামে খতিয়ান করে।
আব্দুল হামিদের অপর ওয়ারীশ মোশারফ হোসেনের স্ত্রী কহিনুর বেগম আদালতে নামজারী আপীল মোকদ্দমা নং- ৪৮১/২০২২-২৩ দায়ের করলে আদালত ৪৫৫ দাগে প্রত্যেক ওয়ারীশ সমান হিস্যায় ১০.৬৬শতাংশ ভূমিতে মালিক মর্মে রায় প্রদান করেন। এছাড়াও সামাজিকভাবে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একাধিক বৈঠকেও আব্দুল হামিদের তিন ছেলে সমান হিস্যায় মালিক মর্মে রায় প্রদান করেন এবং জয়নাল আবেদীনের ছেলেদের মালিকানা বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। মোশারফ গং এতেও ক্ষ্যান্ত না হয়ে জয়নাল আবেদীনের ছেলেদের দখল নেই মর্মে আদালতে ৩৫/২০২৪ নং দেওয়ানী মামলা দায়ের করে। মামলার প্রেক্ষিতে মুন্সীরহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস সরেজমিনে তদন্ত করে জয়নাল আবেদীনের ছেলেদের দখলে ৪৫৫ দাগে ১০.৬৬শতাংশ ভূমি রয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দায়ের করেন মোশারফ ও তাঁর ছেলেরা রাষ্ট্রিয় আইনে, সামাজিকভাবে ব্যর্থ হয়ে জয়নাল আবেদীনের মালিকানাধীন ভূমিতে নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায় গত ৫ মার্চ বিকেলে আরও অন্তত ৮-১০জন সন্ত্রাসীসহ জয়নাল আবেদীনের প্রতিবন্ধী ছেলে সোহরাব হোসেনকে তাদের বাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে জয়নাল আবেদীন ও অন্য ছেলে রেদোয়ানসহ প্রতিবন্ধী ছেলেকে উদ্ধারে গেলে স্বপন রামদা দিয়ে পিতা-পুত্রের উপর হামলা করে। এ সময় ধারালো ছেনি দিয়ে কুপিয়ে জয়নাল আবেদীনের বাম পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি কেটে ফেলে। তাৎক্ষনিক ৯৯৯-এ কল দিলে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। মোশারফ গং অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জয়নাল আবেদীন ও ছেলেদের উপর বারবার হামলা করে, মারধর করে। এমন পরিস্থিতিতে জয়নাল আবেদীন অন্তত ৬-৭ বার আইনের আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানেও তিনি তাদের ভয়ে ভীতসন্তপ্ত অবস্থায় পরিবার নিয়ে জীবনযাপন করছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে জয়নাল আবেদীনের সকল দাবি সত্য মর্মে বক্তব্য রাখেন মোশারফের ভাই খোরশেদ আলম, ফজলুর রহমান, ইয়াকুব শরীফ, মাষ্টার আইয়ুব আহমেদ।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের বিষয়ে মোশারফ ও তাঁর স্ত্রী কহিনুর দাবি করেন, মামলা চলমান অবস্থায় জয়নাল আবেদীন উক্ত বিবাধমান ভুমি ক্রয় করেন। বিবাধমান ভূমিতে দখলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের উপরও একাধিকবার হামলা হয়েছে বলেও দাবি করেন তারা।
এমআই