মো: মাইদুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক: মুক্ত বিদ্যপীঠ, ২ টাকায় হাসি, প্রজেক্ট প্রত্যাশার আলো, লকডাউনে ত্রান সামগ্রী বিতরণ, বন্যা কবলিত এলাকায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া, অনলাইনে শিশু বিকাশে সহযোগিতা করা, বৃক্ষরোপণসহ প্রতিষ্ঠার দুই বছরে সুবিধাবঞ্চিতদের দারিদ্রতার খোলস থেকে মুক্ত করতে নানাবিধ কার্যক্রমের আয়োজন করেছেন নারায়ণগঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'মুক্ততরী'।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মুক্ততরীর নতুন উদ্যোগ "পঞ্চে তৃপ্তি"। যেখানে মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে একজন মানুষ তার চাহিদা অনুযায়ী তৃপ্তি করে খাবার খেতে পারবে। রিকশাচালক, ফেরিওয়ালা, হকার কিংবা ভিক্ষুকসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা মাত্র ৫ টাকায় পেট পুরে খাবার খাচ্ছে এখানে। কেউ টাকা ছাড়া আসলে ফেরানো হচ্ছে না, তাদেরও খাবার দেয়া হচ্ছে। যতক্ষণ খাবার থাকে, খেতে আসা কোনো মানুষকেই না খেয়ে ফিরে যেতে হয়না।
বর্তমানে লকডউনে এ কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধারাবাহিকভাবে চলবে এ কার্যক্রম।
মুক্ততরীর সদস্যরা জানান, আমরা সবাই সাধারণত হোটেলে বা বুফেতে খেতে ভালোবাসি কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষ বা সুবিধাবঞ্চিত মানুষ এই সুযোগটা পায় না তাই তাদের জন্য মুক্ততরীর এই আয়োজন। কম হলেও বুফে খাওয়ার অনুভূতি বা হোটেলের মতো তাদের কাছে পৌঁছে তার চাহিদা অনুযায়ী খাবার।
মুক্ততরীর এসকল কার্যক্রম করে থাকেন সদস্যদের টাকায়। তবে সদস্যরা শিক্ষার্থী হওয়ায়; তারা চাইলেও বেশি সহযোগিতা করতে পারে না। তা সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে তারা আরও মানুষকে সহযোগিতা করতে পারবে বলে জানান মুক্ততরীর সদস্যরা।
পাঁচ টাকায় খাবার নিচ্ছেন এক শিশু
২০১৯ সালে ১লা জুন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করে মুক্ততরী। জয় দত্ত ও রুবাইদ সায়মনের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় এখন প্রায় ১০০ এর অধিক সেচ্ছাসেবী আছে। মুক্ততরীর লক্ষ্য "আজকের সুবিধাবঞ্চিত শিশু আগামীদিনের সুবিধা প্রদানকারী হবে "। এই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে মুক্ততরী। মুক্ততরীর ২০১৯ থেকে বিভিন্ন রকম কার্যক্রম করে যাচ্ছে। যার মধ্যে কিছু কার্যক্রম স্থায়ী।
২ টাকায় হাসি
"২ টাকায় হাসি" যেখানে মাত্র ২ টাকার বিনিময়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ও শিশুদের জন্য বাজার, খাদ্য, বস্ত্র ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। অসহাদের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটাতেই মুক্ততরীর এই উদ্যোগ।
হাসিমুখ কার্যক্রমে মুক্ততরীর সদস্যরা
প্রজেক্ট প্রত্যাশার আলো
"প্রজেক্ট প্রত্যাশার আলো" যার মাধ্যমে ভিক্ষাবৃত্তি করা মানুষ অথবা অসহায় মানুষদের সাবলম্বী করার ব্যবস্থা করা হয়। এই পর্যন্ত ২ জনকে সাবলম্বী করেছে মুক্ততরী। মিরপুরে এক মহিলাকে অটোরিকশা কিনে দেয়া হয়েছে এবং গুলিস্তানে ভিক্ষা করা এক মহিলাকে চায়ের ফ্লাক্সসহ চা বিক্রির সরঞ্জামাদি কিনে দেয়া হয়েছে।
মুক্ত বিদ্যপীঠ
"মুক্ত বিদ্যপীঠ" এর মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনামূল্যে পাঠদান করা হয়। যার ফলে সমাজের দরিদ্র শিশুরা পাচ্ছে শিক্ষার আলো।
এছাড়াও মুক্ততরী বিভিন্ন সময়ে অস্থায়ী কাজও করে যাচ্ছে। লকডাউনে ত্রান সামগ্রী বিতরণ, বন্যা কবলিত এলাকায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া, অনলাইনে শিশু বিকাশে সহযোগিতা করা, বৃক্ষরোপনসহ নানাবিধ কার্যক্রম।
বন্যা কবলিত এলাকায় মুক্ততরীর খাদ্য সহায়তা
মুক্ততরী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক জয় দত্ত বলেন, ভবিষ্যতে মুক্ততরীর আরো ভিন্নধর্মী কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। যেগুলোর মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ও নিম্নআয়ের মানুষরা সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
সময় জার্নাল/এমআই