রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

অধ্যাপক পারভেজের অরাজনৈতিক সংগঠন 'গণ প্রগতি ফোরাম'

শনিবার, মে ১৭, ২০২৫
অধ্যাপক পারভেজের অরাজনৈতিক সংগঠন 'গণ প্রগতি ফোরাম'

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জিও পলিটিক্যাল ইকোনমিস্ট এবং এনবিইআর চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলাম পারভেজের অরাজনৈতিক সংগঠন গণ প্রগতি ফোরাম (পিপিএফ)। সম্প্রতি সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ করেন অধ্যপক পারভেজ। যা বাংলাদেশের প্রগতিশীল সামাজিক, অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য কাজ করে। এছাড়াও টেকসই উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং সমতা প্রচারের মিশন নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি নাগরিকদের সক্রিয় করতে এবং একটি আরও ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠনের জন্য জননীতিতে প্রভাব ফেলতে কাজ করবে।

পিপলস প্রগ্রেসিভ ফোরাম বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চায়। পিপিএফ মূলত প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্যদূরীকরণ এবং নীতিনির্ধারণ, জনগণের সাথে সম্পৃক্ততাও অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নে কাজ করে। 

পিপলস প্রগ্রেসিভ ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয় এর দৃষ্টিভঙ্গি এমন একটি বাংলাদেশ কল্পনা করে, যেখানে সকল নাগরিকের সমান সুযোগ প্রাপ্তির অধিকার রয়েছে, অধিকার সমূহ সংরক্ষিত থাকে এবং শাসন ব্যবস্থায় জনগণের ইচ্ছা ও কল্যাণ প্রতিফলিত করে। 

সংগঠনের মূল উদ্দেশ্যসমূহ-
১. সামাজিক ন্যায়বিচার প্রচার করা: PPF বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যও কর্মসংস্থানে সমতার নীতি গুলিকে সমর্থন করে। 
২. প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়িত করা: মূলত গ্রামীণ নারী ও তরুণ জনগোষ্ঠীর আওয়াজকে জোরালো করার লক্ষ্যে মূল থেকে কাজ করে PPF। 
৩. মানবাধিকার রক্ষাকরা: PPF মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার এবং পরিবেশগত ন্যায়বিচারের মতো বিষয়গুলির উপর গুরুত্ব দিয়ে মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয়। 

স্ট্রেটেজিক ফোকাস এরিয়াঃ  (অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার)
১. অনুশীলন, ন্যূনতম মজুরি আইন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (SME) সহায়তার জন্য কাজ করে। সংগঠনটি শ্রমিক ইউনিয়ন ও স্থানীয় গ্রুপ গুলির সাথে একত্রে শ্রম অধিকার ও সুষম সম্পদ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার 
জন্য কাজ করে। 
২. লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন: পিপিএফ লিঙ্গ সমতার উপর জোর দেয় এবং নারীর অধিকার ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলার জন্য নীতি সমর্থন করে। নারীদের উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন গুলির সাথে পিপিএফ একত্রে কাজ করে, যাতে নারীরা সকল ক্ষেত্রে সমান সুযোগ পায়। 
৩. তরুণদের উন্নয়ন: তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যৎ নেতা ও পরিবর্তনের কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে PPF বিভিন্ন কর্মশালা, ফোরাম ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করে, যা তরুণদের নাগরিক কার্যক্রম, রাজনৈতিক সচেতনতা ও দক্ষতা উন্নয়নে সহায়ক। 
৪. সুশাসন ও দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম: পিপিএফ শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতাকে প্রচার করে। ফোরামটি ক্যাম্পেইন ও জনসচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে দুর্নীতি কমাতে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করতে কাজ করে। 

মূল কর্মসূচি ও উদ্যোগসমূহ- 
পিপিএফ গ্রামীণ ও শহুরে এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং নাগরিক অধিকার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন প্রচারাভিযান  পরিচালনা করে।  সংগঠনটি এমন কর্মশালা ও ফোরাম আয়োজন করে, যেখানে শিক্ষাবিদ, নীতিনির্ধারক এবং সাধারণ নাগরিকরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও নীতি সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন।  পিপিএফ নেতৃত্ব, নাগরিক দায়িত্ব ও সামাজিক উদ্যোক্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে, যা তাদের সক্রিয় নাগরিকত্বে উদ্বুদ্ধ করে। পিপিএফ বিভিন্ন ইভেন্ট ও প্রচারাভিযানের মাধ্যমে জনগণকে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সচেতন করে এবং সবুজ নীতি ও টেকসই চর্চাকে উৎসাহিত করে। 

সাংগঠনিক কাঠামো- 
প্রগতিশীল পিপলস ফোরামের কাঠামো এমনভাবে গঠিত হয়েছে, যাতে এটি মূল থেকে জাতীয় স্তরপর্যন্ত প্রভাব বিস্তার করতে পারে। সংগঠনটি একটি প্রেসিডিয়াম দ্বারা পরিচালিত হয়, যেখানে সিভিল সোসাইটি, একাডেমিয়া এবং সামাজিক অ্যাডভোকেসির সম্মানিত ব্যক্তিরা প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছেন। 
১. প্রেসিডিয়াম: কৌশলগত দিকনির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রেসিডিয়াম দায়িত্বপ্রাপ্ত। PPF প্রেসিডিয়াম সদস্য সংখ্যা প্রেসিডিয়াম সভাপতি নির্ধারন করেন। PPF এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডিয়াম সভাপতি লিখিতভাবে দ্বায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না নেয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। PPF কার্যক্রম ও শৃংখলা নিশ্চিত করার জন্য প্রেসিডিয়াম সভাপতির সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত বলে গণ্য হবে। 
২. সাব-কমিটিঃ PPF কর্মকান্ডকে গতিশীল করার জন্য কার্যভিত্তিক  সাব-কমিটি গঠন করা হবে। 

সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব- 
পিপলস প্রগ্রেসিভ ফোরাম (PPF) দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে, যার মধ্যে রয়েছে এনজিও, একাডেমিক প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি সংস্থাসমূহ। গণমাধ্যমের সাথে নিবিড় ভাবে কাজ করে। PPF তার উদ্যোগকে প্রচার এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলিতে জনসচেতনতা বাড়াতে সচেষ্ট।

প্রভাব ও সাফল্য 
স্থাপনের পর থেকে PPF বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে:  জলবায়ু পরিবর্তন, বর্জ্য কমানো এবং দুর্যোগ সহনশীলতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে একাধিক প্রচারাভিযান চালিয়েছে।  গ্রামীণ এলাকায় নারীদের এবং যুবকদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পেশাগত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। 

ভবিষ্যৎ লক্ষ্য 
PPF তার কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারণের জন্য আরও আঞ্চলিক শাখা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে, বিশেষত অবহেলিত অঞ্চলে। ভবিষ্যৎ লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে একটি জাতীয় নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, ডিজিটাল সাক্ষরতার উপর আরও বেশি সম্পৃক্ততা, এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব তৈরি।

প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম বলেন, " আমরা এমন একটি সমাজ ব্যবস্থা চাই যেখানে মানুষে মানুষে কোন হানাহানি থাকবে না, থাকবে না কোন প্রতিহিংসা, শোষণ, বঞ্চণা ও নারী নির্যাতন, যেখানে নারী-পুরুষ নিশ্চিন্তে নিরাপদে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াবে। যে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সকল নাগরিকের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার গ্যারান্টি থাকবে। 
কোন অলিগার্ক থাকবে না, কোন রাজ পরিবার থাকবে না, থাকবে শুধু নিখাদ গণতন্ত্র ও পূর্ণ ব্যাক্তি স্বাধীনতা। সেই বৈষম্যহীন রাষ্ট্র আমি দেখে যেতে পারবো কিনা জানি না, কিন্তু তার স্বপক্ষে বলবার সাহস না থাকাটাই পাপ

প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম এই উপমহাদেশে, বিশেষ করে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ। একাধারে তিনি একজন চিন্তাবিদ, সমাজ সংস্কারক এবং গরিব-বান্ধব অর্থনীতিবিদ হিসেবে সুপরিচিত, যিনি বাজেটারি কৌশলের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য কাজ করছেন। তিনি ১৯৬০ সালে চট্টগ্রামের একটি সম্মানিত ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন প্রয়াত শিল্পপতি সৈয়দ নুরুল আলম এবং তাঁর মরহুম মা ডা. হোসনে আরা বেগম, বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ছিলেন।  তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান। বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চ-এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। 

তিনি সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের পরিচালক এবং রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে ও দায়িত্ব পালন করেছেন। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, তবে ২০১৭ সালে ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনার প্রতিবাদে তিনি পদত্যাগ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার মিরপুরে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের সিভিল স্পন্সর কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের একজন টেকনোক্র্যাট পরিচালকও। যদিও তিনি একজন তাত্ত্বিক, তবুও তাঁর ১৫বছরের বীমা এবং ব্যাংকিং শিল্পের পরিচালকের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন এবং ব্যবসা প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রদান করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে বীমা, ব্যাংকিং, অর্থনীতি, কর্পোরেট গভর্ন্যান্স এবং উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। 

প্রফেসর আলম মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, USTC, বাংলাদেশ ওপেন ইউনিভার্সিটি, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, ABAC (থাইল্যান্ড)-এর বিভিন্ন ব্যবসায়িক স্কুলে লেকচার দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, মায়ানমার, নেপাল, ফিলিপাইন এবং হংকং সফর করেছেন ব্যবসা ও অর্থনৈতিক বিষয় সহজতর করতে।  তাঁর গবেষণার প্রধান আগ্রহ এখন ভূ-অর্থনৈতিক বিষয়, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, ব্লু ইকোনমি এবং জাতীয় উন্নয়নে প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা। তিনি "Equitable Society" এবং "Poor Friendly Budget" গ্রন্থের লেখক। 

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল