আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাত শুরুর পর প্রথমবার জনসমক্ষে এসেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। খবর বিবিসি'র।
স্থানীয় সময় শনিবার (৫ জুলাই) আশুরার আগের দিনের এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজধানী তেহরানের একটি মসজিদে উপাসনাকারীদের শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায় তাকে—দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজে এমনটিই দেখা গেছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত চলাকালে খামেনিকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল একটি রেকর্ডকৃত ভাষণে। ১৩ জুন শুরু হওয়া ওই সংঘাতে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন।
ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় আকস্মিক হামলা চালায় ইসরায়েল। এর জবাবে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে পাল্টা বিমান হামলা চালায় ইরান।
১২ দিন ধরে চলা এই যুদ্ধে খামেনিকে তিনটি ভিডিও বার্তায় টেলিভিশনে দেখা গেলেও—তার বাঙ্কারে আশ্রয় নেওয়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়।
শনিবার খামেনির জনসমক্ষে উপস্থিতি ঘিরে ইরানের গণমাধ্যমগুলোর শিরোনামে শুধু তিনিই ছিলেন। টেলিভিশনে তাকে দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন সমর্থকেরা—এমন দৃশ্য উঠে আসে সম্প্রচারিত ফুটেজে।
ফুটেজে দেখা যায়, খামেনি পাশে থাকা শীর্ষ ধর্মীয় নেতা মাহমুদ করিমির দিকে ফিরে তাকে আহ্বান জানান—"গাও, ও ইরান।" সাম্প্রতিক ইসরায়েল-যুদ্ধের সময় দেশাত্মবোধক এই গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, ভিডিওটি তেহরানের ইমাম খোমেনি মসজিদে ধারণ করা হয়েছে।
মোহাররম মাসজুড়ে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরানে শোক পালন চলে—এ সময় সাধারণত সর্বোচ্চ নেতার উপস্থিতি দেখা যায়। এই প্রেক্ষাপটেই জনসমক্ষে এলেন আয়াতুল্লাহ খামেনি।
আশুরা পালিত হয় মোহাররমের ১০ তারিখে—চলতি বছর তা পড়েছে আজ ৬ জুলাই। দিনটিকে শিয়া মুসলিমরা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হোসাইনের শাহাদাতের দিন হিসেবে স্মরণ করেন।
২৬ জুন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত পূর্বে ধারণকৃত এক ভাষণে খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান সত্ত্বেও ইরান ইসরায়েলের কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।
এর আগে, ২২ জুন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যুদ্ধে যুক্ত হয় যুক্তরাষ্ট্র। অভিযানে অংশ নেয় ১২৫টি মার্কিন সামরিক বিমান, যেগুলো ইরানের ফরদো, নাতানজ ও ইসফাহান—এই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানে।
১২ দিনব্যাপী এ যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের বিচার বিভাগ।
এমআই