ইসাহাক আলী, নাটোর থেকে:
রাজনৈতিক ভোলবদল বা দলবদলের ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। তবে দলীয় পদ-পদবি পাওয়া নিয়ে অনেক সময় বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে নাটোরের সিংড়া উপজেলায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে বিরোধ ও চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে প্রকাশ্যে সিল দিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেছিলেন সিংড়া উপজেলার চামারী ইউনিয়নের বিলদহর গ্রামের মো. আসাদ প্রাং-এর ছেলে মো. আমান উল্লাহ আমান। অথচ ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচি, মিটিং- মিছিলে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে তাকে।
সম্প্রতি সিংড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিস্টার মো. ইউসুফ আলীর ছবি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যানার ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক ত্যাগী নেতা বলেন, “হামলা-মামলা মোকাবিলা করে আমরা দলের পাশে থেকেছি। অথচ আমাদের মূল্যায়ন না করে এক সময়কার ছাত্রলীগ কর্মীকে নিয়ে মিটিং- মিছিল হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার এবং ত্যাগী নেতাকর্মীদের সঙ্গে অবিচার। এতে সাধারণ মানুষের কাছেও বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আমান উল্লাহ আমান বলেন, “আমি জীবনের প্রথম ভোটই দিয়েছি ধানের শীষে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জোর করে নৌকায় সিল দেওয়া ব্যালট পেপারের সাথে ছবি তোলে। আমি কোনোদিন ছাত্রলীগের পদে ছিলাম না, এখনো ছাত্রদলের পদেও নাই। ইউসুফ ভাই ভালো মানুষ, তাই তার প্রচারণা চালাচ্ছি।”
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট শামীম হোসেন ওরফে ভিপি শামীম বলেন, “উপজেলা বিএনপি কিংবা সহযোগী সংগঠনগুলোর নতুন কোনো কমিটি করা হয়নি। পুরনো কমিটিই বহাল আছে। যারা ছাত্রলীগের পরিচয় লুকিয়ে ছাত্রদলের পরিচয় দিচ্ছে, তারা আসলে সুযোগসন্ধানী। প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ছাত্রলীগ কর্মীর মাধ্যমে ব্যারিস্টার ইউসুফ আলীর নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “ইউসুফ সাহেব ঢাকায় থাকেন। তিনি সিংড়া উপজেলা বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও তৃণমূলের বিষয়ে সরাসরি ধারণা নেই। সেই কারনে পরিচয় লুকিয়ে কোনো ছাত্রলীগ কর্মী তার ছবি ব্যবহার করে ব্যানার বানাতে পারে।”
এমআই