মোঃ এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যুবলীগ নেতা একরামুল হকের ভাড়া মিষ্টি দোকান এক বছর বন্ধ থাকার পর প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বুঝে নিয়েছে মালিকপক্ষ। এরআগে জামানত ফেরত ও মালামাল নেয়ার বিষয়ে একাধিক শালিশ বৈঠক হলেও যুবলীগ নেতা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে। পলাতক থেকে মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে উল্টো উকিল নোটিশ পাঠিয়ে হুমকি দিচ্ছে। রোববার সরেজমিন গিয়ে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দোকান মালিকপক্ষের নিজাম উদ্দিন অভিযোগ করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানে আ’লীগ সরকারের পতনের পর এলাকা থেকে পালিয়ে যায় শুভপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও হাজারীপাড়া গ্রামের হাজী আবদুল করিমের ছেলে একরামুল হক। ফলে বন্ধ হয়ে যায় মুন্সিরহাট বাজারের সিএনজি ষ্ট্যান্ডে তাঁর ভাড়া নেয়া সুইট পার্ক এন্ড বেকারী দোকান।
দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর সম্প্রতি এলাকায় আসার খবর পেয়ে মালিকপক্ষ তাকে গত ১৮ মাসের দোকান ভাড়া দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে অনুরোধ করে। এতে কর্ণপাত না করায় মালিকপক্ষ বাজার কমিটি ও ইউপি কার্যালয়ে অভিযোগ জানায়। বারবার ডাকার পরও যুবলীগ নেতা একরামুল হক বাজার কমিটি ও ইউপি কার্যালয়ে হাজির হয়নি। মালিকপক্ষ নিরুপায় হয়ে একরামুল হকের বড় ভাই নজির আহমেদের নিকট বিষয়টি জানালে তিনি সমাধান করার আশ্বাস দিয়েও টালবাহানা করে। যুবলীগ নেতা একরামুল হক উল্টো আইনজীবির মাধ্যমে ‘তার দোকান দখল করেছে মর্মে’ উকিল নোটিশ পাঠায়।
গত ১৯ আগস্ট উকিল নোটিশ পেয়ে মালিকপক্ষ আবারও ভাড়াটিয়া যুবলীগ নেতা একরামুল হকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পলাতক থাকলেও বিভিন্ন মারফতে যুবলীগ নেতা একরামুল হক মালিকপক্ষের লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা। সর্বশেষ থানায় উভয়পক্ষের বৈঠকে চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জামানত ও মালামাল ফেরত নেয়ার সিন্ধান্ত হলেও যুবলীগ নেতা একরামুল হক পরবর্তীতে আর যোগাযোগ করেনি। ফলে বুধবার বিকেলে মুন্সিরহাট ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর, থানার উপ-পরিদর্শক আরেফীন, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে দোকানের তালা ভেঙে মালামাল পিছনের একটি কক্ষে রাখা হয়। দীর্ঘদিন ধরে দোকান বন্ধ রাখায় মার্কেটের অন্য দোকানের বিক্রিও কমে গেছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে দোকানের ভাড়াটিয়া যুবলীগ নেতা একরামুল হকের বক্তব্য জানতে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে বারবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রোববার মুন্সিরহাট ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর বলেন, ‘দোকানটির ভাড়াটিয়া একরামুল হককে বারবার নোটিশ দিলেও বিষয়টি সমাধানের ব্যাপারে এগিয়ে আসেনি। দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ থাকায় পাশের ব্যবসায়ীদেরও ক্ষতি হয়েছে। বুধবার বিকেলে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দোকানের তালা ভেঙে মালামালগুলো অন্য কক্ষে নিয়ে রাখা হয়েছে’।
একে