শেকৃবি প্রতিনিধি :
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ‘রিজেনারেটিভ এগ্রিকালচার: উৎপাদনশীলতা ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক এক রাউন্ডটেবিল আলোচনার আয়োজন করে।
আজ মঙ্গলবার( ১৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনফারেন্স কক্ষে দুই ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এই গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন নীতিনির্ধারক, গবেষক, কৃষিবিদ ও বিভিন্ন অংশীজন। আলোচনায় পুনর্জননশীল কৃষির গুরুত্ব, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থা ও ভবিষ্যৎ কৃষি নীতির দিকনির্দেশনা নিয়ে বিস্তৃত মতবিনিময় হয়।
বায়ার ক্রপ সায়েন্স ও শেকৃবির কৃষি রসায়ন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ সভার মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে পুনর্জননশীল কৃষি ও কার্বন হ্রাসকারী চাষাবাদ পদ্ধতি প্রসার করা। আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী ও বায়ার ক্রপ সায়েন্সের রেজাউল করিম। এতে কৃষির উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
বক্তারা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন, মাটির উর্বরতা হ্রাস ও পানিসঙ্কট—এসবই বাংলাদেশের কৃষির বড় চ্যালেঞ্জ। তবে পুনর্জননশীল কৃষি এসব সংকট নিরসনে কার্যকর হতে পারে। নির্দিষ্ট ধান বপন পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিবেশের ওপর চাপ কমিয়ে ফলন বাড়ানো এবং ভুট্টার জৈবজ্বালানি ও পশুখাদ্য সম্ভাবনার মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা কমানোর কৌশল নিয়েও আলোচনা হয়। তরুণ উদ্যোক্তাদের কৃষিতে যুক্ত করা, তথ্যনির্ভর প্রযুক্তি ব্যবহার এবং সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
এছাড়াও আলোচনায় উঠে আসে পুনর্জননশীল কৃষির বিস্তার, ধান চাষে কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রযুক্তি, ভুট্টা উৎপাদন ও জৈবজ্বালানির সম্ভাবনা, কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ এবং প্রযুক্তিনির্ভর তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা গড়ে তোলার গুরুত্বসহ নানা বিষয়।
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ, বায়ার ক্রপ সায়েন্সের এশিয়া প্যাসিফিক প্রধান মালু নাকরেইনার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন, পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজের ডিন অধ্যাপক ড. সালাউদ্দিন মাহমুদ চৌধুরী, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এইচ এম এম তারিক হোসাইন, বাকৃবির শিক্ষক ড. আসাদুজ্জামানসহ কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ।
আলোচনা শেষে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বায়ার ক্রপ সায়েন্সের মধ্যে গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি এমইউ (MoU) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা জানান, সরকারি–বেসরকারি সমন্বিত সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে দেশে পুনর্জননশীল কৃষি আরও দ্রুত বিস্তার লাভ করবে।
একে