অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরে গত তিন দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশা আর হালকা তুষার বৃষ্টিতে জেলায় নেমে এসেছে তীব্র শীত। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চারপাশ ঢেকে থাকছে সাদা কুয়াশায়। শীতের এমন দাপটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের।
ভোর থেকেই কনকনে ঠান্ডা বাতাস আর কুয়াশার কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না অনেকেই। সড়ক ও নৌপথে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কুয়াশার কারণে দূরপাল্লার যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করছে, কোথাও কোথাও বন্ধও রাখা হচ্ছে। এতে কর্মজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
শীতের প্রকোপে সবচেয়ে করুণ অবস্থায় পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক ও খেটে খাওয়া মানুষরা। কাজের সুযোগ কমে যাওয়ায় অনেক পরিবারে নেমে এসেছে অনাহারের শঙ্কা। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। খোলা আকাশের নিচে কিংবা রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে। কোথাও দেখা যাচ্ছে, শিশুদের কোলে নিয়ে আগুনের পাশে বসে আছেন মা-বাবারা।
শীতের তীব্রতায় শুধু শিশু ও বৃদ্ধ নয়, যুবকরাও সারাদিন গরম জামাকাপড় পরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। গ্রামের হাটবাজারগুলোতেও লোকসমাগম কম দেখা যাচ্ছে। কৃষি খাতেও পড়তে শুরু করেছে শীতের প্রভাব। মাঠে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন কৃষক ও কৃষিশ্রমিকরা।
এদিকে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। চিকিৎসকরা শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণ ও সহায়তা জোরদার না হলে তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরবাসীকে শীতের এই কঠিন সময় পার করতে বাড়তি সতর্কতা ও সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন সচেতন মহল।
এমআই