আব্দুর রব। আমার প্রিয় অনুজ। ৩৫ তম বিসিএস পাস করে ডাক্তারী পেশায় যোগ দিয়েছে। বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার। পাশাপাশি সার্জারীতে এফসিপিএস করছে। একটুকুন ওর পরিচয়।
২) আমরা সুযোগ পেলেই ঘুরতে যাই। রব আর আমার মাঝেমাঝে দারুণ কম্বিনেশন হয় এ বিষয়ে। ছুটি মিললেই প্রকৃতি খুঁজি নিজেদেরকে হারিয়ে ফেলার জন্য। যদিও ডাক্তারদের ছুটি যেন অমাবস্যার চাঁদ। আমাদের জন্মস্থান কয়রায় কোথাও ঘুরতে গেলে রব প্রায় একটা আক্ষেপ করে। বলে আমি নাকি এলাকায় বেশ পরিচিত। কমবেশি সবাই নাকি আমাকে চেনে! তথ্যটা ঠিক। তবে রব জানেনা যে, কয়রা- পাইকগাছার প্রতিটা পরিবার ওর নাম জানে। এলাকায় বছর দুয়েক চাকুরী করার কারণে, রোগীদেরকে হাসি আনন্দে সেবা দেয়ায়, বিনে পয়সায় পরামর্শ দেয়ায় সবাই তার ভক্ত। ওর সবচেয়ে বড়গুণ হলো আজ পর্যন্ত পরামর্শ ফিস টাকে মুখ্য করে দেখেনি। টাকা না থাকলে রোগী দেখা যাবেনা- এই নীতিতে রবকে আঁকড়ে থাকতে দেখিনি। ওই যেমন টা মাধ্যমিকে লিখতাম- বড় হলে ডাক্তার হবো, এলাকা বাসির সেবা করবো, গরীব-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবো। ঠিক ওই চরিত্র প্রিয় অনুজের মধ্য ফুটে উঠেছে। অল্পদিনেই সার্জারীতে বেশ পারদর্শী হয়েছে ও। এটা তার সহকর্মীর জবানবন্দি। এসব ভাবতে খুব ভাল লাগে। আমাদের সমাজে রবদের খুব দরকার।
০৩) ন্যায়ের পথে থাকলে বাঁধা আসবেই। এটা চরমতম সত্য কথা। সদ্য এমবিবিএস পাস করে এলাকায় পোস্টিং হওয়ার কয়েক মাসের মধ্য রব সেটা বেশ বুঝতে পেরেছিল। যে উদারতা নিয়ে সে এলাকায় গিয়েছিল সেখানে আবর্জনার স্তুপে লুকিয়ে থাকা কিছু অসাধু লোকের কাছে নিজেকে বিকিয়ে দিতে পারিনি সে। তাইতো বেশ অভিমান নিয়ে অন্যত্র বদলী হয়েছিল! সুন্দরকে গ্রহণ করতে আমাদের ঢের বাঁধে। অসততায়, অন্যায়ে বাঁচতে বড় অভস্ত্য হয়ে গেছি আমরা! তাইতো একজন রব তার জন্মস্থানে বেশিদিন সেবা দিতে পারিনি। তাতে ক্ষতিটা রবের হয়নি নিশ্চয়ই। ওই নোনা পানির অসহায় মানুষগুলোর সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে বেশী! জীবন একটা জটিল সমীকরণের নাম। আপাতত থাক, এসব গল্প আরেক দিন করবো।
অজস্র মানুষের ভালবাসা দোয়া তার সাথে আছে। আর, মেহনতী মানুষের দোয়া বৃথা যায়না, রব।
শুভ জন্মদিন , প্রিয় অনুজ।
লেখকের ছবি :