রুহুল সরকার, রাজীবপুর প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গণ টিকাদান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার(৭ আগষ্ট) রাজীবপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১ হাজার ৮০০ জন মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।
ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা যাতে সহজেই করোনা টিকা গ্রহণ করতে পারে এজন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে গিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সরা এই টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায়। রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত পরিসংখ্যানবিদ রোকুনুজ্জামান রাজু বলেন, আমাদের সকল প্রস্তুতি শেষ। শনিবার একযোগে প্রতি ইউনিয়নে ৬০০ জনকে মানুষকে টিকা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজীবপুর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডে বসবাসরত নারী ও পুরুষের এই টিকা পাবে। এজন্য এসব ওয়ার্ডের ২০০ জনের নাম রেজিষ্ট্রেশন করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তারা নাম রেজিষ্ট্রেশনে সহায়তা করছে।
মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নে ৯ টি ওয়ার্ডে টিকার চাহিদা ২০ হাজারের মত এর ভিতরে মাত্র ৩ টি ওয়ার্ডের ৬০০ জন টিকা পাবে। ইউনিয়নে চর এবং নদী বিচ্ছিন্ন অনেক গ্রাম আছে এসব এলাকার মানুষ দূরত্বের জন্য উপজেলা শহরে গিয়ে টিকা নিতে অনিহা প্রকাশ করে। আগামীকাল টিকা দেওয়া হবে শুনে বিভিন্ন মানুষ তার কাছে টিকা নেওয়ার জন্য ফোন করছে এবং বাড়িতে এসে টিকা'র আবদার করছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন,ইউনিয়ন পর্যায়ে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকা দানের আওতায় নিয়ে আসা দরকার।
কোদালকাটি ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক আমিনুর রহমান বিনামূল্যে করোনা টিকার রেজিষ্ট্রেশন করে দিচ্ছেন। মুঠোফোনে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে টিকা দেওয়ার কথা শুনে গ্রামের মানুষজন আগ্রহী হয়েছে টিকা নিতে। কিন্তু শুধু ৩ টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের টিকা দেওয়া হবে তাই অনেককে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। এছাড়াও মুঠোফোন নেটওয়ার্ক ভালো না হওয়ার কারণে রেজিষ্ট্রেশনে সময় বেশি লাগছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে বুথ স্থাপন করে টিকা প্রদান হবে। ক্যাম্পেইনে ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রদান করা হবে।এ ক্ষেত্রে বয়স্ক, নারী ও প্রতিবন্ধীদের বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।গণটিকা গ্রহীতাদের রেজিষ্ট্রেশনে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা এবং স্বেচ্ছাসেবীদের এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
টিকার প্রথম ডোজ প্রাপ্তির পর পরবর্তীতে একইভাবে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হবে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলবে টিকাদান কর্মসূচি। টিকা প্রদানের পর ভ্যাকসিনেশন টিম প্রতিটি কেন্দ্রে ১ ঘণ্টা অবস্থান করবে এবং কারও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে তাকে তত্বাবধানে রাখা হবে।
রাজীবপুর সদর ও কোদালকাটি ইউনিয়নে গণটিকা কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে হবে। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের টিকাদান কর্মসূচি শিকারপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মোহাঃ সরোয়ার জাহান বলেন, আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। শনিবার আমার গণ টিকাদান কর্মসূচি সফল ভাবে বাস্তবায়ন করবো।
রৌমারী উপজেলায়ও এদিন ৩ হাজার ৬০০ জনকে টিকা প্রদান করা হবে। রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বলেন, আমদের লক্ষ উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে একদিনে ৩৬০০'শ জনকে টিকা দেওয়া।আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছি।
সময় জার্নাল/এমআই