গোলাম আজম খান, কক্সবাজার: কক্সবাজার জেলায় বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় পর ফুটে উঠেছে দুর্গত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। সাম্প্রতিক এই বন্যায় জেলার নয় উপজেলার মধ্যে সাতটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এজন্য অপরিকল্পিত ও দুর্বল বেড়িবাঁধকে দায়ী করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। গত সপ্তাহে ভারী বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানি নেমে যাওয়ার থেকে জেলার প্রধান দুই নদী মাতামুহুরি ও বাকখালী নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই নদী পাড়ের ভাঙ্গনে ঘর বাড়ি ও নদী পাড় ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে মাতামুহুরি ও বাকখালী নদীর ভাঙ্গনে দুই শতাধিক বাড়ি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। মাতামুহুরি নদীর ১০টি পয়েন্টে এবং বাকখালী নদীর ৭ টি পয়েন্টে নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই দুই নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে বালির বস্তা ফেলে ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু করেছে।
সম্প্রতি টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে আকষ্মিক বন্যার কবলে পড়ে কক্সবাজার সদরসহ কয়েকটি উপজেলার চার লক্ষাধিক মানুষ। এ জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে সাতটিই বন্যায় প্লাবিত হয়। এক সপ্তাহের জলাবদ্ধতা শেষে এখন নেমে গেছে বন্যার পানি।
তবে, পানি নেমে যাওয়ায় ফুটে উঠেছে রাস্তা-ঘাট আর ক্ষেত-খামারের ক্ষতচিহ্ন। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এবারের বন্যায় জেলায় রাস্তা ঘাট, ফসল, অবকাঠামোসহ বাড়ি ঘরের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে চকরিয়া, রামু, সদর ও ঈদগাঁও উপজেলায়। এছাড়া পানি নেমে গেলেও মাতামুহুরি ও বাকখালী নদীর ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে নদী তীরের বাসিন্দারা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, অপরিকল্পিত ও দুর্বল বেড়িবাঁধের কারণেই বন্যায় বেশি ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী। আর ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের হিসেবে, এবারের বন্যায় জেলার ৫১টি ইউনিয়নের ৫২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়।
এদিকে বন্যায় নদী ও বেড়িবাধের ক্ষতির চিত্র পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী অকিল বিশ্বাস। গত দুদিন ধরে তিনি কক্সবাজারের বন্যায় বেরি বাঁধ এবং নদী ভাংগনের চিত্র সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন। আজ সকালে তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরি নদীর শহর রক্ষা বাঁধের পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি জানান, মাতামুহুরী নদী খুবই ফ্লাশি নদী। এ এলাকায় রেকর্ড পরিমান বৃষ্টি হয়েছে। এতে তীব্র স্রোতের ঢলের পানিতে হুমকীর সম্মুখিন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ ভেঙ্গে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব বাধ পুননির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি। এসময় চকরিয়া পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সময় জার্নাল/এমআই