স্টাফ রিপোর্টার। সময় জার্নাল : চলতি মাসের ১৫ আগস্টের মধ্যে ৫৪ লাখ টিকা আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
দেশব্যাপী গণটিকা কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ৭ আগস্ট থেকে চলছে করোনার গণ টিকাদান কর্মসূচি। এই কর্মসূচির আওতায় টিকা পেয়েছেন দেশের ৩০ লাখের বেশি মানুষ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ১০ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে কোভ্যাক্স থেকে আরো ৩৪ লাখ টিকা পৌঁছাবে। চীন থেকে কেনা ১০ লাখ টিকা পৌঁছাবে এবং আরও ১০ লাখ চীন থেকে আমাদের উপরহার হিসেবে দেবে।
মোট ৫৪ লাখ টিকা আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে আমরা পেয়ে যাব। এতে সুবিধা হবে টিকার কার্যক্রম যে বেগে চলছে সেটা বজায় রাখতে পারব।
যেসব কিনেছি, চীন থেকে এ মাসে আরো ৫০ লাখ টিকা দেবে।
তিনি বলেন, কোভ্যাক্স থেকে যা পাই, একসঙ্গে অনেক পাই না। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে চীনের সঙ্গে আলোচনা করে আরো ছয় কোটি টিকার অনুমোদন সরকার দিয়েছে। চীনও সেই অনুমোদন দিয়েছে। এখন আমরা চুক্তির পর্যায়ে আছি। অর্থনৈতিক কমিটিতে গিয়ে পাস হয়ে যাবে। এই টিকা আসলে টিকা কার্যক্রম অনেক জোরদার হবে। চীন সেপ্টেম্বরে এক থেকে দেড় কোটি টিকা, অক্টোবরে দুই কোটি ৩০ লাখ ও নভেম্বরে দুই কোটি ৩০ লাখ দেবে। পাশাপাশি কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন আসবে। ফাইজারের টিকাও পাওয়ার কথা ৬০ লাখ। আমরা আশা রাখি ভারতের কাছে যে টিকা রয়ে গেছে তা পাবো। কিন্তু এখনও কোনো রকমের কনফার্ম তারিখ দেয়নি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ২১ কোটি টিকার কথা বলেছিলাম। এরমধ্যে নতুন করে ছয় কোটি। ২১ কোটির মধ্যে তিন কোটি চীনের ছিল। এই তিন কোটি বাদে আরো চার কোটি যোগ হলো। কারণ যারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা তো টিকা নাও দিতে পারে। এজন্য আমরা টিকার সংখ্যার বাড়াচ্ছি। যেখান থেকে পাওয়ার সম্ভবনা বেশি দেখছি সেখানে কথা বলছি।
তিনি বলেন, জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা আগামী বছরের মাঝামাঝি আসবে। তার আগে আমরা টিকা পেলে সেটাই গ্রহণ করব। চীন থেকে আগে টিকা পাওয়ার সম্ভবনা দেখছি। আমরা চাই মানুষকে তাড়াতাড়ি টিকা দিতে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা এখন খুব প্রয়োজন। টিকা নিয়ে মানুষ সুরক্ষিত হয়। সংক্রমণ থেকে পুরোটা সুরক্ষিত হবে তা নয়। মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব রজায় রাখতে হবে। কারণ টিকা নেওয়ার পর অ্যান্টিবডি তৈরি হতে সময় লাগে। বুস্টার ডোজ দিতে হয়, দ্বিতীয় ডোজ নিতে হয়।
সোয়া কোটি মানুষ নিবন্ধন করে টিকা পাচ্ছে না- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, হাতে কত টিকা আছে এখন বলতে পারছি না, তবে বেশকিছু টিকা আছে।
নিবন্ধন করেও এসএমএস পাচ্ছে না কেন— সে প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কারণ টিকা হাতে থাকলে মেসেজ যেতে থাকবে। আর টিকা যখন হাতে থাকে না তখন মেসেজ যায় না। টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে মেসেজ দেওয়া হয়। সামনে টিকা বেশি করে আসবে, তখন আরো বেশি করে মেসেজ যাবে।
গ্রামের বয়স্কদের মধ্যে মৃত্যুরহার ৯০ শতাংশ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এজন্য টিকা গ্রামে নেওয়া হয়েছে। এই কার্যক্রম মাঝেমাঝেই ঘোষণা দেব, টিকা হাতে এলে যে পরিমাণ লাগে ক্যাম্পেইন করতে, সেটা পেলেই এভাবে টিকা দেব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গণটিকা কার্যক্রম শুরুর দিন থেকে গ্রামে মানুষ টিকা নিয়েছে। যেভাবে নির্বাচনের সময় লোকে আসে, লাইনে দাঁড়িয়ে, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে টিকা নেয়। প্রতিটি ইউনিয়নে ৬০০ করে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আমরা দেখলাম যে তার থেকে অনেক বেশি লোক এসে হাজির হয়েছিলেন। যেসব সেন্টারে বেশি টিকা ছিল তারা বেশি দিয়েও দিয়েছে। ঝড়বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় পরের দিন টিকা দেওয়া হয়েছে, দুর্গম এলাকায় পরে দেওয়া হয়েছে। সব জায়গায় সুষ্ঠুভাবেই হয়েছে। টিকার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে।
তিনি বলেন, পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে যে টিকা দেওয়া হচ্ছে সেটা চলমান আছে এবং চলমান থাকবে। নরমাল টিকার কার্যক্রম চলমান থাকবে। আমাদের হাতে যে টিকা আছে দৈনন্দিন টিকার প্রোগ্রাম চলমান থাকবে। দুই, তিন দিনে কোনো ঘটনা নজরে আসেনি। মোটামুটি সব জায়গায় ভালোভাবে হয়েছে। আমরা জেনেছি এ পর্যন্ত নরমাল কার্যক্রমের বাইরে ৩০ লাখের বেশি টিকা লোকে পেয়েছে।
সময় জার্নাল/আরইউ