মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ফরিদপুরে বারাশিয়া নদীতে দুই বছরেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মাণ কাজ

রোববার, আগস্ট ২৯, ২০২১
ফরিদপুরে বারাশিয়া নদীতে দুই বছরেও শেষ হয়নি সেতুর নির্মাণ কাজ

এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী উপজেলার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা বারাংকুলা প্রাইমারী ও হাই স্কুল সংলগ্ন বারাশিয়া নদীতে দুই বছরেও একটি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। দুই উপজেলার জনসাধারণ ও স্কুলের শিক্ষার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে বরাদ্দ সাপেক্ষে ব্রিজ নির্মাণের প্রাথমিক কাজ হিসেবে নদীর দুই পাড়ে শুধুমাত্র ৩০ ভাগ কাজ করার পর প্রায় দুই বছর ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকার মানুষ। কিন্তু এ নিয়ে কারো কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি।

নির্ধারিত সময়ের মেয়াদের পরও কাজ শেষ হয়নি।  এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করে সেতুর কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

দীর্ঘদিন ধরে এই ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় আলফাডাঙ্গা ও বোয়ালমারী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের বসবাসরত মানুষসহ স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের বারাশিয়া নদী পাড় হতে চরম দুর্ভোগের শিকারে পড়ছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে, অথবা পায়ে হেঁটে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পারিবারিক ডিঙ্গি নৌকায় ভরসা হয়ে দাঁড়ায় এই জনপদের মানুষের। অথবা ৮/১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলতে হয়। 

আলফাডাঙ্গা উপজেলা এলজিইডির কার্যালয় সূত্র জানায়, সেতুটির অভাবে দুইটি উপজেলাবাসীর যোগাযোগ ব্যাবস্থা জন্মলগ্ন থেকে বিছিন্ন। বাঁশের সাঁকো অথবা নৌকাই একমাত্র ভরসা। তাই দুইটি উপজেলার যোগাযোগ বন্ধন ঘটাতে, জনদুর্ভোগ কমাতে এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে নতুন একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে অনুযায়ী আলফাডাঙ্গা উপজেলার বারাংকুলা প্রাইমারী স্কুল ও বারাংকুলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিকট ৬২৫০.০০ মিটার এ বারাশিয়া নদীর উপর ৪০ মিটার পিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই।  সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ৯০ লক্ষ ২১ হাজার টাকা। যার কাজের বাস্তবায়নের দ্বায়িত্বে রয়েছে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। 

জানাগেছে, এস বি সি ই এল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি মুল ঠিকাদার হলেও কামারগানি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেবি করে কাজটি শুরু করেন। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসের ২১ তারিখের মধ্যে এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ শেষ করে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা বিল তুলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হলেও এই ব্রিজটি নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ সেতু নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। 

বোয়ালমারীর শেখর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে একটা সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। একপাশে শেখর ইউনিয়ন, যেখানে বড়গাঁ প্রাইমারী স্কুল, বড়গাঁ নতুন বাজার রয়েছে। এখানে সপ্তাহে দুইদিন হাট বসে। এলাকার বারাংকুলা, ভাটপাড়া, দিঘিরপাড় রাখালতলী, গঙ্গানন্দপুরসহ প্রায় ১০ টি গ্রামের লোকজন এবং অপর পাশে আলফাডাঙ্গার বুড়াইচ ইউনিয়নের ফলিয়া, হিদাডাঙ্গা, শিয়ালদিসহ প্রায় ১০ গ্রামের লোকজন এখান দিয়ে চলাচল করে। দীর্ঘদিন চোখের সামনে কাজ বন্ধ রয়েছে এ নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা দেখি না। কবে শেষ হবে এ কাজ তা কে জানে।
 
আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক স্থানীয় বিআরডিবি'র চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আবুল কাশেম মন্ডল বলেন, এখানে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর একটি সেতুর দাবি ছিল। সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান এর সময়কালে এবং তার প্রচেষ্টায় সেতুটি নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। সে অনুযায়ী কাজও শুরু হয়। কিন্তু দুই পাশে কিছু কাজ হওয়ার পর দীর্ঘদিন পড়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন হতে চললো কাজ শুরুর পর এভাবে পড়ে থাকলেও কেউ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখিও না শুনিও না। কতদিন পড়ে থাকবে তাও জানা নেই। 

এ ব্যপারে আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রাহাত ইসলাম বলেন, এ কাজের ঠিকাদার জেলে থাকায় কাজটি শুরুর পরেও বন্ধ রয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে যে পর্যন্ত কাজ হয়েছে তার হিসেব করে নতুন করে টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। তারপর পুনরায় কাজ শুরু হবে। 

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান জাহিদ বলেন, যতদুর জানি এ কাজের ঠিকাদার বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হয়ে জেলখানায় বন্দি। তাই কাজটি দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির স্বাধিকারী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দী। ফলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটির কারো কোন বক্তব্য জানা যায়নি।

সময় জার্নাল/এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল