এম. পলাশ শরীফ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে ভাইজোড়া গ্রামে মাঠজুড়ে পাকা গম ফসলের সমারোহ। সফল কৃষক মো. শহিদুল ইসলাম লিটনের মুখে হাঁসি। ৫০ শতক পতিত জমিতে সাড়ে ৩ মাসের মাথায় ২০ মন গম পাচ্ছেন তিনি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের অর্থায়নে প্রর্দশনী বাস্তবায়নে এ উপজেলায় সদর ইউনিয়ন, বলইবুনিয়া, পুটিখালী, দৈবজ্ঞহাটী, চিংড়াখালী, হোগলাপাশা ও বনগ্রাম ইউনিয়নে ১৬ হেক্টর তথা ৪০ একর জমিতে এ গমের ফসল চাষাবাদ করেছে কৃষকরা।
শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে জানাগেছে, ১৫নং সদর ইউনিয়নের ভাইজোড়া গ্রামের মৃত. মাষ্টার তৈয়েবুর রহমানের ছেলে সফল কৃষক মো. শহিদুল ইসলাম লিটন উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম বারের মত এ বছরে দেশি আমন ধান ঘরে তোলার পরে পতিত দেড়বিঘা জমিতে বারি ৩২ গম চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন তিনি।
ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কৃষি অফিসের মাধ্যমে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে এ গম চাষ করেন তার জমিতে। মাত্র ১১৫ দিনের মাথায় বাম্পার ফলন ফলেছে এ গম ফসলের। মাঠজুড়ে এখন পাকা সোনালী গমের সমরোহ। হেলে দুলে দুলছে শীষ ভর্তি গম। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গ্রাম থেকে এ গম দেখতে আসছেন কৃষকরা।
কৃষক মো. শহিদুল ইসলাম লিটন বলেন, পূর্বে এ জমিতে শুধুমাত্র দেশি আমন ধান ফসল ফলাতাম। পরবর্তীতে পরে থাকতো পতিত জমি হিসেবে। মাঝের মধ্যে সবজি চাষাবাদ করাহতো। এ বারে এ প্রথম গম চাষ শুরু করি। আল্লাহর রহমতে খুবই ভালো ফসল হয়েছে। সামান্য এ দেড় বিঘা জমিতে যেভাবে সফল দেখা যাচ্ছে। আর মাত্র এক সপ্তাহ পরে গম কাটা হবে। ২০ মনের বেশি গম ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন। প্রতিমন গম বাজারে বিক্রি হবে ১২শ’ থেকে ১৪ শ’ টাকা।
ভাইজোড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম লিটন, সেলিম শেখ, শুকুর শেখ, আব্দুল আজিজ শেখ সহ একাধিক কৃষকরা বলেন, কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যেমে নির্দিষ্ট সময়ে বীজ ও সার বিনামূল্যে কৃষকদেরকে আরো বেশি পরিমান দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মর্তাদের প্রতি দাবি জানান তারা।
এ সর্ম্পকে মোড়েলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পতিত জমিতে চাষাবাদ বৃদ্ধির লক্ষে এ ইউনিয়নে প্রথম বারে এ গমের চাষ হয়েছে। কৃষি অফিসের মাধ্যেমে কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে আগ্রহ বাড়ানো হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতি কৃষককে ১৫ কেজি গমের বীজ পরিমিত রাসায়নিক সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। এতে কৃষকরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে ঝুঁকছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সিফাত আল মারুফ বলেন, কৃষি দপ্তরের পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন প্রযুক্তির মাধ্যেমে নির্দিষ্ট সময়ে রবি সষ্য প্রনোদনা দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। এ কারনেই নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে। কোন জমি পতিত থাকবেনা। গম ফসলে এ বাম্পার ফলনের কারনে আগামিতে আগ্রহ বাড়বে কৃষকদের বলে তিনি মনে করেন।
সময় জার্নাল/এমআই