স্পোর্টস ডেস্ক : এ যেন ঠিক নিজেদের সময়ে ফিরে গেলেন মোহাম্মদ রফিক, খালেদ মাহমুদ, আফতাব আহমেদরা। ব্যাটিংয়ে দারুণ শুরুর পর হঠাৎ ছন্দপতন, শেষে আবার ঘুরে দাঁড়িয়ে জেতার মতো সংগ্রহ পাওয়া। পরে বোলিংয়ে বাজে শুরুর পর ঘুরে দাঁড়ানো, সেখান থেকে ক্যাচ মিসের মহড়ায় ম্যাচ হেরে যাওয়া- যেমনটা গত দশকের মাঝামাঝি সময়ে দেশের ক্রিকেটে ছিল নিয়মিত চিত্র।
শুক্রবার রায়পুরের শহিদ বীর নারায়ণ সিং স্টেডিয়ামে সেই স্মৃতির পুনর্মঞ্চায়নই করল বাংলাদেশ লেজেন্ডস দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ লেজেন্ডস দলকে বাগে পেয়েও শেষপর্যন্ত হারাতে পারেনি মোহাম্মদ রফিকের দল। বেশ লড়াই করেই ৫ উইকেটে জিতেছে ক্রিকেট কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার দলটি।
ম্যাচে আগে ব্যাট করে মোহাম্মদ নাজিমউদ্দিন, আফতাব আহমেদ, মেহরাব অপি ও মোহাম্মদ শরীফদের মারকুটে ব্যাটিংয়ের সুবাদে বাংলাদেশ পায় ১৬৯ রানের সংগ্রহ। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মাঝপথে খানিক পিছলে গেলেও, শেষপর্যন্ত ১৮.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে নিয়েছে।
রান তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেছেন কার্ক এডওয়ার্ডস। তিনি ২৮ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ের মারে করেন এই রান। উইকেটরক্ষক রিডলি জ্যাকবসের সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটিতে মাত্র ৪৪ বলে ৭২ রান যোগ করেন এডওয়ার্ডস। মূলত এই জুটির কারণেই ম্যাচ হেরে যায় বাংলাদেশ।
অবশ্য এতে বড় দায় ছিল বাংলাদেশের ফিল্ডারদের। দুই ওভারের মধ্যে জ্যাকবস ও এডওয়ার্ডসের তিনটি ক্যাচ ছাড়েন মোহাম্মদ শরীফ, খালেদ মাহমুদ ও মোহাম্মদ রফিক। এই ক্যাচ মিসের সুযোগেই ম্যাচ বের করে নেন এডওয়ার্ডস ও জ্যাকবস। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন জ্যাকবস।
পরে পাঁচ নম্বরে নেমে দলকে জয়ের বন্দরে ভেড়ানোর দায়িত্বটা সুনিপুণভাবে পালন করেন অধিনায়ক ব্রায়ান লারা। তিনি শেষপর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২৩ বলে ৩১ রান করে। এছাড়া মহেন্দ্র নাগামুতো অপরাজিত ছিলেন ১০ বলে ১৬ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন আব্দুর রাজ্জাক।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা করেন বাংলাদেশ দলের দুই ওপেনার নাজিমউদ্দিন ও মেহরাব অপি। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে ৮ ওভারে আসে ৬৪ রান। টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় ফিফটির আশা জাগিয়ে নাজিমউদ্দিন ফেরেন ২৪ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ের মারে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে।
পরে দ্বিতীয় উইকেটে ৬ ওভারে ৫৬ রান যোগ করেন আফতাব আহমেদ ও মেহরাব অপি। একপ্রান্ত আগলে খেলছিলেন মেহরাব, আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে পসরা সাজান করোনাকে হারিয়ে প্রথম মাঠে নামা আফতাব। তাদের ব্যাটে ভর করে ১৪ ওভারেই ১২০ রান করে ফেলে বাংলাদেশ।
সেখান থেকেই ছন্দপতন। পরের ৩ ওভারে আসে মাত্র ১৩ রান, উইকেট পড়ে ৪টি। এতেই পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে ১৮তম ওভারে তিন ছক্কার মারে মোহাম্মদ শরীফ তুলে নেন ২২ রান। শেষপর্যন্ত তিনি আউট হন ১৩ বলে ২৬ রান করে। বাংলাদেশ পায় ১৬৯ রানের সংগ্রহ।
টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলে সবকয়টিই হারল বাংলাদেশ। সোমবার নিজেদের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা লেজেন্ডসের মুখোমুখি হবে মোহাম্মদ রফিকের দল।
সময় জার্নাল/আরইউ