মাহমুদুল হাসান, কুবি প্রতিনিধি: সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে পরীক্ষার রুটিন না পেলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শহীদ মিনারে আত্মহত্যা করার ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো: আনিসুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
২ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে 'Comilla University'র গ্রুপে এমন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি৷
তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, 'আমি কুবির বুকে শহীদ মিনারে আত্মহত্যা করবো। আত্মহত্যার ডেইট হয়তো আর পিছাতে পারছি না! চার বছরে ৪ সেমিস্টার অপেক্ষার অবসান কোথায়? আত্মহত্যা ছাড়া কোন সমাধান দেখছি না।কারণ আমার বর্ষের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেটার অনার্স শেষ। ন্যাশনালে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ৪র্থ বর্ষে পড়ে। আমার একবছরের ছোট জাবিতে পড়ুয়া বোন আমার বর্ষের। কুবিতে ভর্তি হওয়াটা কি আমাদের অপরাধ ছিল?
পরিবারে যখন অভাব আর অসুস্থতা থাকে তখন স্বপ্নগুলো কতোটা লজ্জা পায়। যেটা হয়তো প্রশাসন হয়তো বুঝবে না। কারণ উনাদের মাস শেষে একাউন্টে বেতন ঢুকে যাচ্ছে অভাব বলতে কিছু নেই। অনার্স প্রথম আর শেষ বর্ষ বুঝি না। সকল ব্যাচের এক সাথেই পরীক্ষা শুরু করতে হবে কেননা সবাই জটে আছে। সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে পরীক্ষার রুটিন না পেলে আমি কুবির বুকে শহীদ মিনারে আত্মহত্যা করবো।'
আত্মহত্যার স্ট্যাটাসের ব্যাপারে জানতে আনিছুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সজ্ঞানে, ভেবে-চিন্তেই এই লেখাটি লেখেছি। কারণ আমাদের সেশনজটের কারণে জীবনের স্বপ্নগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এন. এম. রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, আমি তার সাথে কথা বলেছি যাতে কোনোকিছু করার আগে আমার সাথে কথা বলে। আর বিভাগের প্রতি তার কোনো অভিযোগ নেই। কারন করোনার কারণে সবাই তো পিছিয়ে গিয়েছে। আমরা তাদের সেশনজট কমাতে অনলাইন পরীক্ষার দিকে অনেকদূর এগিয়েছি।
উল্লেখ্য, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে পরীক্ষা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ যেখানে কেবল স্নাতকোত্তর ও স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এর আগে কেবল স্নাতকোত্তর দিয়ে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটি শিক্ষার্থীদের সমালোচনার প্রেক্ষিতে পরিবর্তন করে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যান্য ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও সেটারো কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই৷
সময় জার্নাল/এমআই