ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে নিউমার্কেট যাচ্ছিলাম। সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে।
আজিমপুর মোড়ে হঠাৎ পাশের একজন আমাকে বললেন, 'ভাই আপনার মোবাইল সাবধানে রাখুন'।
পাশে একজনকে দেখিয়ে বললেন, 'উনি আপনার পকেটে হাত দিচ্ছিলেন'।
ওই চোর বাস থেকে নেমে গেল।
নোকিয়া মোবাইল। দাম বেশি নয়। এই মোবাইল নিয়ে কী করবে? ভেবে মনে মনে হাসলাম।
আজ (বুধবার) রাত ১০টার দিকের ঘটনা।
বাসে করে কাওরান বাজার মোড়ে বাস স্টপেজ আসার পর হঠাৎ রিংটোন বেজে উঠলো। আমার এক সিনিয়র কলিগের ফোন। আগে তিনি আমাকে একবার কল দিয়েছিলেন, কিন্তু টের পাইনি বলে ধরতে পারিনি।
যাইহোক, কথা বলার সময় একটা জোরালো স্পর্শ অনুভব করলাম। নিচে চেয়ে দেখি, জানালার পাশ দিয়ে এক লোক। সেই আমার মোবাইল নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল। ব্যর্থ হলো।
আমি 'চোর' 'চোর' বলে চিৎকার করলাম।
অবাক করা বিষয় হলো-চোরটি দৌড় দিল না। স্বাভাবিকভাবে সবার সামনে দিয়ে হেঁটে গেল!
বয়স ৩৫-৪০ হবে। গায়ের রং শ্যামলা। পরনে লুঙ্গি আর শার্ট।
অথচ বিপরীতে থাকা বাসের যাত্রীরা চোরটিকে সহজেই ধরতে পারত। কিন্তু বাসের লোকেরা সবাই তামাশা দেখছে।
কেউ নামার সাহস পেল না।
ওখানে একটি চক্র আছে। মোবাইল চোর চক্র। উল্টো নাজেহাল হওয়ার ভয় আছে। এজন্যই হয়তো কেউ নামল না।
(কথা বলার জন্য আমি সেই নোকিয়া ফোনই ব্যবহার করি। চার্জ বেশি থাকে। কথা বলায় আরাম। কিন্তু ওটা পুরনো মার্কেটে বিক্রি করলে ওই চোর কত টাকা আর পাবে? এর জন্য কত ঝুঁকি ওরা নেয়।)
ওই সময় নতুন বিয়ে করেছি। ডে অফের আগের দিন অফিস শেষ করে বাড়ি যেতাম। অনেক রাত হত।
ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছিলাম। কাপাসিয়া আমরাইদ বাজারের কাছে আসার পর হঠাৎ বাস ডাকাতির কবলে পড়লাম।
ওই সময়ই নোকিয়ার সর্বশেষ আপডেট ফোন। ভালো ছবি উঠে। বিয়ের ছবিগুলি ওই ফোনেই ছিল।
প্রতিকূল পরিস্থিতি দেখে নিজেই শখের ওই ফোনটি ডাকাতদের হাতে বাড়িয়ে দিলাম। খুবই কষ্ট লেগেছিল সেদিন।
(বাস ডাকাতির ঘটনা নিয়ে আরেকদিন লিখব।)
লেখক : সাংবাদিক।