ডা. সাইদুল আশরাফ কুশল :
আমরা অনেকেই মনে করি, আত্মহত্যা শুধু পূর্ণবয়স্ক মানুষই করতে পারে! কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হল, অধিকাংশ আত্মহত্যাকারী মানুষই পূর্ণবয়স্ক না!
** মোট আত্মহত্যাকারীদের মাঝে ৬৪% এর বয়স ১৩-১৫!
** ১২-১৮ বছরের শিশুদের মাঝে মৃত্যুর ২য় প্রধান কারণ হলো আত্মহত্যা!
** ১৫-২৪ বছর বয়সীদের মাঝে মৃত্যুর ৩য় প্রধান কারণ হলো আত্মহত্যা!
ইন্টারেস্টিং বিষয় হল, প্রতি ৫ আত্মহত্যাকারীর ৪ জনেরই সরাসরি সতর্কবার্তা পাওয়া যায়! এবং টিনএজারের ক্ষেত্রে, প্রতিটি আত্মহত্যার জন্য ২৫টি চেষ্টা হয়ে থাকে! অর্থাৎ এদের আত্মহত্যা প্রতিরোধ সম্ভব যদি আমি আপনি সচেতন হই।
শিশুদের মাঝে আত্মহত্যা মূল কারণ হলো - আচমকা নেয়া সিদ্ধান্ত। এরা অধিকাংশ পরিকল্পনা ছাড়াই রাগ বা অভিমানে এমন কাজ করে থাকে। শিশুদের বা টিনএজারদের বিষন্নতায়ও পূর্ণবয়স্কদের মতো উপসর্গ দেখা যায় না। তাদের ক্ষেত্রে অনেকাংশেই শুধু বিরক্তিভাব, কিছু ভালো না লাগা, ঘুমের সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। তারা মনের ভাবও ঠিক বড়দের মত প্রকাশ করতে পারে না, আবার আমরা বড়রাও তাদের মনের ভাবটা অনেকসময়ই বোঝার চেষ্টা করিনা!
আপনার সন্তানের মুখে এই কথাগুলো শুনলে অবশ্যই আপনার সতর্ক হওয়া দরকার -
"আমাকে কেউ ভালবাসে না!"
"আমার বেঁচে থাকার কোন মানে হয় না!"
"আমি যখন থাকবো না..."
"আমি আর তোমাদের কারো জন্য সমস্যা হবো না!"
"এটা আমার প্রিয়, তবে কিছুদিন পর তুমি নিয়ে নিতে পারো!"
"এই দুনিয়া আমার জন্য না!"
সন্তানের মাঝে নিমোক্ত বিষয় পরিলক্ষিত হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন -
#বার বার নিজেকে ক্ষতি করার প্রবণতাযুক্ত
#নিজের প্রিয় জিনিস সব বিলিয়ে দিলে
#ঘুম বা খাওয়ার সমস্যা হলে
#বুলিং বা যেকোন বড় মানসিক চাপের সম্মুখীন হলে
#সন্তান যদি বলে যে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দেখাতে চায়
যেহেতু শিশু-কিশোরদের অধিকাংশ সময় অভিভাবকদের সাথে অতিবাহিত হয়, তাই তারাই পারেন সবার আগে শিশুদের বিষণ্নতা বা আত্মহত্যার ঝুঁকি নির্ধারণ করতে। সন্তানের আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্যারেন্টিংও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
অভিভাবক হিসেবে আপনার সর্তকতা, বাঁচাতে পারে আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ! অবশ্যই দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ, সন্তানের জন্য হতে পারে life-saving!