মোঃ ইমরান মাহমুদ, জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের ইসলামপুরে দারুত তাক্বওয়া মহিলা কওমি মাদরাসার আবাসিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির তিনজন শিশু শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজন শিক্ষককে আটকসহ মাদরাসার পাঠদান আপাততঃ বন্ধ রেখেছে পুলিশ।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা হলো উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের পোড়ারচর সরদারপাড়া গ্রামের মাফেজ শেখের মেয়ে মীম আক্তার (৯), গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভুকুড়া মোল্লাপাড়া গ্রামের মনোয়ার হোসেনের মেয়ে মনিরা খাতুন (১১) ও সুরুজ্জামানের মেয়ে সূর্য ভানু (১০)।
গত রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোররাত থেকে তারা নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় পরদিন সোমবার বিকালে মাদরাসার মুহতামিম (প্রধান শিক্ষক) মাও. মো. আসাদুজ্জামান ইসলামপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। জিডি নম্বর ৫১১।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তম সেতুর পুর্বপাড়স্থ বাংলাবাজার এলাকার দারুত তাক্বওয়া মহিলা ক্বওমী মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীরা শনিবার রাতে মাদরাসার আবাসিক কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। রবিবার ভোররাতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে ডেকে তুলেন। অন্য ছাত্রীদের মতোই নিখোঁজ শিশুরাও নামাজের প্রস্তুতি নেয়। নামাজের পর তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।'
গোয়ালেরচর ইউনিয়ন বিট পুলিশের তদারকি কর্মকর্তা ও ইসলামপুর থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) মাহমুদুল হাসান মোড়ল বলেন, 'দারুত তাক্বওয়া মহিলা মাদরাসার মুহতামিম মাও. মো. আসাদুজ্জামান নিখোঁজের পরদিন থানায় জিডি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
নিখোঁজ মীম আক্তারের মা হাসিনা বেগম জানান, 'তার মেয়েকে ১৫দিন আগে মাদরাসায় রেখে আসেন রবিবার দুপুরে মাদরাসার হুজুরের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে।' নিখোঁজ মনিরা খাতুনের বাবা মনোয়ার হোসেন জানান, তার মেয়েকে ৯ দিন আগে মাদরাসায় দিয়ে আসেন।' নিখোঁজ সূর্য ভানুর বাবা সুরুজ্জামান জানান, '১৫ দিন আগে তার মেয়েকে মাদরাসায় রেখে আসেন।'
সন্তানরা হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ায় অভিভাবকদের চরম শঙ্কার মধ্যে দিন কাটছে। নিজেরাও সম্ভাব্য জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন মেয়েদের সন্ধান পেতে; বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাজেদুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, 'নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের সন্ধান পেতে পুলিশ সার্বিক চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদরাসার মুহতামিম মাও. মো. আসাদুজ্জামানসহ চারজন শিক্ষককে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদরাসার পাঠদান আপাততঃ বন্ধ রাখা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আটক অন্য তিন শিক্ষক হলেন রাবেয়া আক্তার, শুকরিয়া আক্তার ও ইলিয়াস হোসেন।
সময় জার্নাল/এমআই