ইমরান ইমন: শতবছরের ইতিহাস ঐতিহ্যে লালিত স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ, সিলেটের সুপ্রাচীন শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ার সূতিকাগার মুরারিচাঁদ কলেজ। যা জনসাধারণের কাছে বহুল পরিচিত এমসি কলেজ নামে। প্রতিষ্ঠাকালের দিক থেকে দেশের কলেজগুলোর মধ্যে ৭ম ঐতিহ্যবাহী কলেজ এটি। ১৮৯২ সালে সিলেটের প্রখ্যাত শিক্ষানুরাগী রাজা গিরিশচন্দ্র রায় তার প্রমাতামহ মুরারিচাঁদ এর নামানুসারে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। পূর্বে কলেজটি সিলেট শহরের বন্দরবাজারে অবস্থিত ছিল। ১৮৯২ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত রাজা গিরিশচন্দ্র রায় কলেজটির সকল খরচাদি বহন করেন। ১৯০৮ সালে রাজা গিরিশচন্দ্র রায় মারা গেলে কলেজটি সরকারি সহায়তায় চলতে শুরু করে এবং ১৯১২ সালে কলেজটি পূর্ণাঙ্গ সরকারি কলেজরূপে আত্মপ্রকাশ করে। একই বছর তৎকালীন আসামের চিফ কমিশনার স্যার আর্চডেল কলেজটিকে দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণির কলেজে উন্নীত করেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও অন্যান্য নানান সমস্যার কারণে কলেজের ক্যাম্পাস পরিবর্তনের প্রয়োজন দেখা দেয়। অন্যদিকে ১৮৯৭ সালের বিরাট ভূমিকম্পে রাজা গিরিশচন্দ্র রায়ের বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবকিছু লণ্ডভণ্ড তথা ধ্বংস হয়ে যায়। তখনই ধ্বংসের বুকে আলোকবর্তিকা নিয়ে এগিয়ে আসেন মুরারিচাঁদ কলেজ এর পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম সদস্য, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষানুরাগী, মুরারিচাঁদ কলেজের এক মহানায়ক খান বাহাদুর সৈয়দ আব্দুল মজিদ (কাপ্তান মিয়া)। ১৯০৮ সালে রাজা গিরিশচন্দ্র রায় মৃত্যুবরণ করলে কলেজটি এইডেড প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। সেই সময় আব্দুল মজিদ কাপ্তান মিয়ার উদ্যোগে কলেজটি নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায় এবং যারফলে আজ অবধি শতবছর ধরে মাথা উঁচু করে বেঁচে আছে।
১৯২১ সালে আসাম সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান আব্দুল মজিদ কাপ্তান মিয়া। তিনি মুরারিচাঁদ কলেজকে শহরের ভেতরের ছোটো পরিসর থেকে উপযুক্ত বড় পরিসরে নগরীর বন্দরবাজার হতে তিন কিলোমিটার দূরে থ্যাকারের টিলায় বর্তমান টিলাগড়ে প্রায় দেড়শো একর খাস জমি অধিগ্রহণ করে মুরারিচাঁদ কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং কলেজটিকে দেশের বুকে একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়তে মনোনিবেশ করেন। বলা হয়, রাজা গিরিশচন্দ্র রায় মুরারিচাঁদ কলেজ নামে যে বীজ রোপণ করেছিলেন, খান বাহাদুর আব্দুল মজিদ কাপ্তান মিয়া সেটিকে বটবৃক্ষে রূপান্তরিত করেছেন। তারই প্রচেষ্টায় কলেজটি ১৯১২ সালে প্রথম শ্রেণির কলেজে উন্নীত হয়। ১৯২৬ সালে ডিগ্রি কোর্স এবং ১৯২৭ সালে অনার্স কোর্স চালু হয় তারই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। ১৯১৯ সালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেটে আসেন। সিলেটের আপামর মানুষের পক্ষ থেকে কবিগুরুকে যে সংবর্ধনা দেয়া হয় উক্ত সংবর্ধনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল মজিদ কাপ্তান মিয়া। অত্যন্ত দুঃখজনক, মুরারিচাঁদ কলেজ তার দৃষ্টিনন্দন নতুন ক্যাম্পাস থ্যাকারের টিলায় উদ্বোধনের আগেই মন্ত্রী থাকাবস্থায় মাত্র পঞ্চাশ বছর বয়েসে খান বাহাদুর সৈয়দ আব্দুল মজিদ কাপ্তান মিয়া মৃত্যুবরণ করেন। তিনিই এমসি কলেজের দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাসের রূপকার, দূরদর্শী চিত্রশিল্পী।
সাইত্রিশটি সিঁড়ি মাড়িয়ে যেতে হয় প্রশাসনিক ভবনে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের কার্যালয়ে। আসাম পদ্ধতিতে তৈরি প্রশাসনিক ভবনটির বয়স একশো বছর। প্রশাসনিক ভবনের সামনে রয়েছে ফুলে-ফুলে সাজানো-গোছানো বাগান। বিভিন্ন ফলমূলের গাছও দেখা যায় সেখানে। ফুলে ফলে ভরপুর আঙিনাকে দেখে মনে হয় এমসি কলেজের ভূস্বর্গ।
একসময় এমসি কলেজের বুকে কোন ম্যুরাল ছিল না। তবে এমসি কলেজের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল ক্যাম্পাসে স্থাপন করা হয়। যা পেয়ে শিক্ষার্থীরা যেমন আনন্দিত তেমনই বেড়েছে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য। শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে জানার আগ্রহও তৈরি হয়েছে ব্যাপক।
সিলেটে রবীন্দ্রনাথ শতবছর স্মরণোৎসব-২০১৯ পালন করা হয়। ১৯১৯ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেটে আসেন। এবং এমসি কলেজেও তিনি পদচারণা করেন। তারই স্মৃতিচিহ্ন ধরে রাখতে রবীন্দ্র ম্যুরাল স্থাপিত হয় এমসি কলেজে।
রবীন্দ্র ম্যুরাল স্থাপিত হবার পর থেকে শিক্ষার্থী ও সাধারণের দাবি উঠে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এঁর ম্যুরাল তৈরির জন্য। এরই প্রেক্ষিতে ২০২১ সালে কলা ভবনের সামনে রবীন্দ্র ম্যুরালের পাশে যুক্ত হয় নজরুল ম্যুরালটি। যা বর্তমান অধ্যক্ষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সম্পন্ন হয়। এতে করে সবুজ গাছপালায় ভরপুর ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যের ডালপালা বাড়তে থাকে। পর্যটকদের টানতে থাকে এমসি কলেজে। আসামের পদ্ধতিতে বানানো দুতলা বিশিষ্ট কলা ভবনের সামনে দাঁড়ালে মনে হবে, দুই কবি কথোপকথনে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মাত্র ১৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজ হিসেবে ১৮৯২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এফ. এ ক্লাস (বর্তমান উচ্চমাধ্যমিক) শুরু করে মুরারিচাঁদ কলেজ। বর্তমানে ইন্টারমিডিয়েট ও অনার্স-মাস্টার্সসহ শিক্ষার্থীর সংখ্যা পনেরো হাজারেরও অধিক এবং পনেরোটি বিষয়ে কলেজটিতে অনার্স কোর্স চালু আছে।
রয়েছে সুবিশাল গ্রন্থাগার। যেটি নতুন-পুরাতন ষাট হাজারেরও বেশি বইয়ে সমৃদ্ধ। শিক্ষার্থীরা কার্ডের মাধ্যমে চাইলেই বই বাড়িতে নিয়ে পড়তে পারেন আবার গ্রন্থাগারে বসেও পড়ার জন্য রয়েছে অত্যন্ত সুন্দর সুব্যবস্থা। এছাড়াও প্রতিটি বিভাগে রয়েছে আলাদা আলাদা সেমিনার। সেখান থেকেও শিক্ষার্থীরা বই নিয়ে পড়তে পারেন। আছে অডিটোরিয়াম। সবুজগাছপালার ডালের ফাঁকে লাল বৃত্তটি দূর থেকেই মনকাড়ে। বলছিলাম, ভাষা শহিদদের স্মরণে নির্মিত গাছপালার ফাঁকে উঁকি দেয়া নান্দনিক শহিদ মিনারের কথা। ক্যাম্পাসের বুকে রয়েছে একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন। যা সিলেটের মধ্যে একমাত্র প্রতিষ্ঠিত বোটানিক্যাল গার্ডেন। শিক্ষার্থীদের নামাজের জন্য ক্যাম্পাসের সুবিশাল পুকুরের একধারে রয়েছে মসজিদ।
ক্যাম্পাসের প্রধান পুকুরঘাটটি ছাত্রছাত্রীদের মিলনমেলাস্থল। যেখানে বাদাম খেতে খেতে গল্পগান, হৈ-হুল্লোড় করে সময় পার করেন শিক্ষার্থীরা। সুবিশাল পুকুর জুড়ে রয়েছে শ্বেতপদ্ম। যা পুকুরটিকে দিয়েছে গুণগত সৌন্দর্যের আলাদা অলংকার। আর পুরো ক্যাম্পাস পেয়েছে দ্বিগুণ সৌন্দর্য পুকুরটিকে ঘিরে। ছোটোছোটো টিলা বিস্তৃত ক্যাম্পাসকে আরও সবুজায়ন করতে টিলাগুলোতে লাগানো হয়েছে অসংখ্য চারাগাছ। যা ইতোমধ্যে বড় হতে শুরু হয়েছে। ছোটো ছোটো টিলায় সবুজের ছায়া নামে বিকেল বেলা আর নীল আকাশে উড়ে যায় মেঘের ভেলা। একেক সময় একেক সাজে সজ্জিত হয় ক্যাম্পাস। অসংখ্য ছাত্রছাত্রীর পদচারণায় মুখরিত হয় প্রতিনিয়ত।
সিলেটকে বলা হয় চা'য়ের শহর। দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে এখানকার মানুষের চা'য়ের প্রতি ঝোঁক একটু বেশিই। সিলেট জেলায় চা বাগান ভরপুর। তারই ধারাবাহিকতায় এমসি কলেজেও ২০১৭ সালে চা বাগান করা হয়। ছোটো পরিসরে হলেও, দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষজন সহজেই চা বাগানের ঘ্রাণ নিতে পারেন এই ক্যাম্পাসে।
কলেজের রয়েছে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীরা সেটি ব্যবহার করতে পারেন। ছাত্রছাত্রীদের থাকার জন্য রয়েছে হোস্টেল ব্যবস্থা। ছাত্রী হোস্টেল এবং ছাত্র হোস্টেল। পুরোটাই ক্যাম্পাসের আওতায়। ছাত্রাবাসে ঢুকতেই চোখে পড়বে সরু রাস্তার দুপাশে ছোটোবড়ো গাছে ভরপুর। একপাশে টিলা৷ যা সবুজরূপ ধারণ করে থাকে সবসময়। ছোটো-ছোটো গাছের পাতার ফাঁকে-ফাঁকে ফুল ফুটে আছে। সেখানে মৌমাছি আর প্রজাপতি খেলা করছে অবিরাম। এ যেন স্বপ্নের বাগিচা। ছাত্রাবাস গুলি আলাদা আলাদা ব্লক নামে পরিচিত। প্রতিটি ব্লকেই রয়েছে ছাত্রদের খেলাধুলা করার জন্য মাঠ। ছাত্রাবাসের ভেতরে রয়েছে পুকুর। মসজিদ। এছাড়াও কেন্দ্রীয় বিশাল খেলার মাঠ তো আছেই। যা সিলেটের বুকে অনন্য। মাঠটিতে খেলাধুলার করতে পারেন যে কেউ। জনসাধারণ থেকে শুরু করে সবার জন্যই মাঠটি উন্মুক্ত।
কলেজের আঙিনাতেই রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য ডাক বিভাগের একটি পোস্ট অফিস। এই পোস্ট অফিসটিতে একসময় কত চিঠি পড়ত। কালের বিবর্তনে তা কমেছে বহুগুণ। তবুও ইতিহাস আজ স্বাক্ষী হয়ে ঠাঁই নিয়েছে পুরাতন ডাক বাক্সে।
কলেজটি প্রথমে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল৷ দেশভাগের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আছে।
শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রমে মুরারিচাঁদ কলেজ বহু এগিয়ে। এখানকার সবচেয়ে প্রাচীন সাংস্কৃতিক সংগঠনটির নাম মোহনা। যেটি ২০০৭ সালে একঝাঁক তরুণ শিক্ষার্থীর হাতে গড়ে উঠে। বসন্তবরণ উৎসবসহ নানা কার্যক্রম করে থাকে মোহনা সাংস্কৃতিক সংগঠনটি।
এছাড়াও থিয়েটার মুরারিচাঁদ, মুরারিচাঁদ কবিতা পরিষদ, এমসি কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটি, মুরারিচাঁদ ডিবেট ফেডারেশনসহ আরও অনেক সংগঠন এমসি কলেজের অলংকার হয়ে সামাজিক, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
প্রতি বছর এমসি কলেজে বাঙালির প্রাণের মিলনমেলা বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে হয়ে থাকে। বসন্তবরণ উৎসব। বইমেলা। জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন উৎসব পালন করা হয় অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সাথে।
কলেজটি অনেক বীর সন্তানদের জন্ম দিয়েছে। জন্ম দিয়েছে জ্ঞানী-গুণী মহারথীদের। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের বীর উত্তম। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ। সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বিখ্যাত ঐতিহাসিক নিহাররঞ্জন রায়। বাংলাদেশি পদার্থবিজ্ঞানী মোহাম্মদ আতাউল করিম। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনসহ অনেক জ্ঞানী গুণী মহারথীদের জন্ম দিয়েছে সিলেটের সুপ্রাচীন শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজ।
থিয়েটার মুরারিচাঁদ সভাপতি, রেজাউল করিম রাব্বি ক্যাম্পাস সম্পর্কে বলেন, সাংস্কৃতিক চর্চার অনন্য ভূমি আমাদের চিরসবুজ ক্যাম্পাস। চিরসবুজ ক্যাম্পাসকে আরও সবুজায়ন করার লক্ষ্যে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। এখন শুধু ক্লাসে ফেরার অপেক্ষা।
এমসি কলেজের শিক্ষার্থী ও মোহনা সাংস্কৃতিক সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক পল্লবী দাস মৌ বলেন, এমসি কলেজে পড়াশোনা করা ছাত্রছাত্রীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই জীবনকে অনুভব করে থাকে কারণ আমাদের রয়েছে সবুজে বিস্তীর্ণ বিশাল ক্যাম্পাস।
এমসি কলেজের শিক্ষার্থী ও এমসি কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আজহার উদ্দীন শিমুল বলেন, ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা করছি প্রথম বর্ষ থেকেই। এমসি কলেজে অনেক শেখার জায়গা আছে। প্রতিনিয়ত শিখছি।
মুরারিচাঁদ কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এনামুল ইমাম বলেন, সংস্কৃতিচর্চায় এম সি কলেজ সিলেটে একটি অগ্রগণ্য প্রতিষ্ঠান। হেমন্তের পাতা ঝড়া উৎসবের মতো সংস্কৃতিকর্মীরা এখানে বিচরণ করে, এক উৎসব মুখোর পরিবেশে।
ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ বলেন, মুরারিচাঁদ কলেজের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়াতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে বন বিভাগের সহযোগিতায় ৭০ হাজার (বনজ, ফলজ, ভেষজ) চারাগাছ লাগানো হয়েছে কলেজ ক্যাম্পাসের উঁচুনিচু টিলায় এবং বন বিভাগ দুই বছর সেটির পরিচর্যা করবে।
রাজা গিরিশচন্দ্র রায়ের হাতে রোপিত বীজ, খান বাহাদুর সৈয়দ আব্দুল মজিদ কাপ্তান মিয়ার হাতে এসে প্রতিষ্ঠিত বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে৷ এমসি কলেজের ইতিহাসের উক্ত দুই মহানায়কের তেমন কোন উল্লেখযোগ্য স্মৃতিচিহ্ন ক্যাম্পাসে নেই। এমসি কলেজে তাদের অবদানকে উজ্জ্বল করে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে নান্দনিক অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা এমসি কলেজ সম্পর্কে জানাতে তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ভবন বা মিলনায়তনের নামকরণের দাবি শিক্ষার্থীদের।
লেখক: শিক্ষার্থী, এমসি কলেজ, সিলেট।