ইমরান মাহফুজ :
যে কোন সমাজ রাষ্ট্র এগিয়ে যায় তারুণ্যের শক্তিতে। নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে তরুণদের নানান উদ্যোগে। তাদের জীবন ও কীর্তিতে চিরাচরিত ভূষণ পালটে যায় দ্রুত।
আমি বিশ্বাস করি লাখো শহিদের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের পেছনে তারুণ্যের যে অবদান তা অনস্বীকার্য; বিশেষ করে শুধু ভাষার জন্য যে সংগ্রাম তা মূলত তৎকালীন সময়ে তরুণদের এগিয়ে আসার উচ্ছ্বাসের ঢেউয়ের বহিঃপ্রকাশ। স্বাধীনতার পরে সামাজিক হিংসাত্মক নৈরাজ্য থেকে বেরিয়ে সামাজিক মুক্তির জন্য কাজ করেছেন অনেকে।
তন্মধ্যে প্রজন্মের অগ্রনায়ক আবিদ আজম। সাংস্কৃতিক পরিবারের বেড়ে ওঠেন তিনি। ভালোবাসেন মায়ের মতো দেশকে। পেয়েছেন উল্লেখযোগ্য মানুষের ভালোবাসা। তাদের জীবন দর্শনে তার হয়েছে চলার দারুণ অভিজ্ঞতা। সাহিত্য সংস্কৃতির সমাজে তার অবদান অসামান্য।
আবিদ আজমের পারিবারিক নাম মুহাম্মদ আলী আজম। বাবা আলহাজ্ব মফিজুর রহমান আবু তাহের এবং মা কোহিনুর বেগম। ১৯৮৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন লেখক ও সাংবাদিক আবিদ আজম। মাদারিপুর জেলার কালকিনী উপজেলায় জন্ম নেয়া তারুণ্যের এ পথযাত্রী পড়াশোনা সম্পন্ন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে।
৭ম শ্রেনীতে থাকতেই চাচার পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হিসেবেও ছাপা হতো তার নাম। এরপর প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ থেকে ট্রেনিং গ্রহণ শেষে প্রথম দশকে আন্তর্জাতিক সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন অস্ট্রেলিয়ার শিশু সাংবাদিকদের মুখপত্র ত্রৈমাসিক শিশুকন্ঠ’র সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন।
শিশুদের সংবাদ নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেনে। তারপর শিল্প,সাহিত্য-সংস্কৃতি ও গণমাধ্যমের সাথে আপাদমস্তক জড়িয়ে নিয়েছেন নিজেকে।
বর্তমানে তিনি কাজ করছেন বেসরকারী এফএম স্টেশন রেডিও টুডে ৮৯.৬ ‘র বার্তা বিভাগে। পাশাপাশি খন্ডকালীন শিক্ষকতা করেন একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
শিশুসাহিত্যিক ও কবি আবিদ আজমের এ পর্যন্ত গল্প ও ছড়া-কবিতার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে- আমাদের ক্লাসে একটা পরী আছে, খসড়া ছড়ার পসরা, বইখেকো ভূত, একটা ছড়া লুকিয়ে আছে মায়ের আচঁল তলে ও ভূত ডট কম উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন পত্রিকায় সাহিত্যের নানান বিষয়ে কয়েক হাজার লেখা প্রকাশিত হলেও প্রথম বই প্রকাশ পায় ২০১০ সালে। মৌলিক বই ছাড়াও যৌথগ্রন্থ আছে প্রায় ত্রিশটি। প্রকাশিত সম্পাদনা গ্রন্থ- বাংলাদেশের নির্বাচিত কিশোর মুক্তিযুদ্ধের গল্প ব্যাপক সাড়া ফেলে পাঠক মহলে।
সাপ্তাহিক বৈচিত্রের সাবেক এই সহযোগী সম্পাদক যুক্ত ছিলেন দৈনিক ইত্তেফাক, আনন্দ আলো ও ভোরের কাগজের মতো শীর্ষ পত্রিকাগুলোতে। দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ’র সহ-সম্পাদক হিসেবে শিশু কিশোর বিভাগ কলরব সম্পাদনা করেছেন দু’বছর। এরপর ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি যুক্ত আছেন দেশের প্রথম বেসরকারী এফএম রেডিও ষ্টেশন রেডিও টুডে’র বার্তা বিভাগে। বিশেষ প্রতিবেদন, সংবাদ উপস্থাপনা ও সেলিব্রেটি নিউজে প্রতিনিয়ত ধ্বনিত হয় তাঁর কন্ঠস্বর।
টেলিভিশন অনুষ্ঠানেও দেখা মেলে তাঁর। এছাড়া খুশির চাঁদ এবং আমি মুসলাম দুটি সঙ্গীত প্রকাশের পর বিভিন্ন সময় অঘোষিতভাবে নিজের টাইমলাইনে প্রকাশ করেন তার সুমধুর কণ্ঠে বিভিন্ন সঙ্গীত।
আবিদ আজম ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও সাব এডিটর কাউন্সিলের সদস্য। এছাড়া নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে যুক্ত আছেন সাপ্তাহিক দেশগ্রাম এবং কাঁচের দেয়াল ম্যাগাজিনে। আল মাহমুদ ফাউন্ডেশনেরও মহাসচিব তিনি।
সম্প্রচার সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ‘বিবিএফ-ইয়ূথ ইনোভেশন এ্যাওয়ার্ড ছাড়াও তাঁর ঝুঁলিতে রয়েছে দেশগ্রাম এ্যাওয়ার্ড, সরকারী তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির প্রশিক্ষক সম্মাননা, লাটাই ছড়া সাহিত্য পুরস্কার, সাহিত্য প্রণোদনা পুরস্কার, ষ্টার ভয়েজ সম্মাননা, খেলাঘর সম্মাননা, প্রথম আলো কৃতি ছাত্র সংবর্ধনা ইত্যাদি।