আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম থেকে: জলজ্যান্ত একটা মেয়ে হঠাৎ করে এমন নাই হয়ে গেলো অথচ আমরা নিশ্চুপ, আমরা খুব ব্যস্ত, আমরা ভাবলেশহীন হয়ে গেছি!! এভাবে হুটহাট মৃত্যু জিনিসটা আমাদের কাছে সয়ে গেছে মনে হচ্ছে!
নগরীর মুরাদপুরের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আরো একটি মর্মান্তিক মৃত্যু! কে নেবে এই মৃত্যুর দায়ভার ??
চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ মোড়, যেটাকে চট্টগ্রাম শহরের রাজধানী বা কেন্দ্রবিন্দু বলা হয়। এখানেই গত রাতে ড্রেনে পড়ে নিখোঁজ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাদিয়ার মরদেহ পাঁচঘন্টা চেষ্টার পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও স্হানীয় তরুণরা!!
নিহত সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া (১৯) চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। তার বাসা নগরীর হালিশহর থানার বড়পোল এলাকায়। মামার সাথে আগ্রাবাদে চশমা বানাতে এসেছিল সাদিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানা যায়, সাদিয়া তার মামার সঙ্গে চশমা কিনে রাত আনুমানিক ১০ টার সময় বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ে রবি কাস্টমার কেয়ারের পাশের ড্রেনে হঠাৎ পড়ে যায় সে। এরপর সঙ্গে থাকা তার মামাও সাথে সাথে ড্রেনে ঝাঁপ দিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। তবে অতিরিক্ত পানি ও ময়লার স্তুপ জমে থাকায় সাদিয়াকে আর খোজে পাওয়া যায়নি। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে ঘটনাস্থলে তাকে উদ্ধারে অভিযানে নামে।
রাত ২.৫৭ মিনিটের দিকে স্হানীয় তরুণরা নালার স্ল্যাব ভেঙে উদ্বার কাজ চালালে ফায়ার সার্ভিসসহ সাদিয়ার লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা নিউটন বলেন, রাস্তার নিচে যে স্লাবটি রয়েছে তা দীর্ঘ ২ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং খুবই গভীর। ড্রেনটিতে এত পরিমাণে ময়লা জমে রয়েছে যে তা স্তূপে পরিণত হয়েছে।
ড্রেনে পড়ে মৃত্যুর ঘটনাই নতুন না, এর আগেও নগরীর মুরাদপুরে ড্রেনে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যার লাশের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি, নগরীতে এরকম ড্রেনে পড়ার ঘটনা বেশ কয়েকটা ঘটেছে কিন্তু এ বিষয়ে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই, প্রশাসনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।
ইমিডিয়েট শহরের এসব ড্রেন ব্যবস্থার উন্নয়ন চাই। এসব মরণ ফাঁদ বন্ধ হোক। আরো কোন সাদিয়ার যেনো এমন করুণ মৃত্যু নাহয়, আর কোন স্বপ্নের কুঁড়ি যেনো অঙ্কুরে বিনষ্ট নাহয়।
সময় জার্নাল/এমআই