পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি : স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নৌ-প্রটোকল চুক্তির আওতায় আজ ‘বাংলাদেশ হতে ভারতে নৌপথে খাদ্যপণ্যের প্রথম পরিবহন/রপ্তানি’ শুরু হয়েছে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি আজ নরসিংদীর পলাশে অবস্থিত ‘প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক’ এর জেটি থেকে ভারতগামি খাদ্যপণ্যবাহি জাহাজের যাত্রার উদ্বোধন করেন।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে সরকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে রপ্তানি বাণিজ্যের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে আরো জোরদার করতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধিন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নৌপথে সরাসরি ভারতে পণ্য রপ্তানি করতে যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগের ফলে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বাড়বে। কারণ নৌপথে পণ্য পরিবহন তুলনামূলক সাশ্রয়ী। তাছাড়া কলকাতাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে খাদ্যপণ্যসহ বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে বাংলাদেশ হতে ভারতে নৌপথে খাদ্য পণ্যবাহি জাহাজ প্রেরণের বিষয়টি সারা পৃথিবীতে অবস্থানরত বাংলাদেশের মানুষ গৌরববোধ করবে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা পেয়েছি ঠিকই কিন্তু মুক্তির লক্ষ্যে এগোতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুর সময়ে দেশের মধ্যে অর্থনীতআউি এগিয়ে যেতে শুরু করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সঠিক নেতৃত্ব না থাকায় সবকিছুতে দেশ পিছিয়ে যায়।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশের অর্থনীতির ঝুড়ি শুধু ভরে যায়নি, ঝুড়ি ভরে নৌপথে খাদ্যপণ্য রপ্তানি করছি।
বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য মোঃ আনোয়ারুল আশরাফ, বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দিন, নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ প্রথমবারের মত নৌপথে ভারতে পণ্য রপ্তানি করতে যাচ্ছে। দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ প্রাণ-আরএলএল দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এ গ্রুপের পণ্য বিশ্বের ১৪৫টি দেশে নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে। নরসিংদীর পলাশে প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ক্যান্ডি, বিস্কুট, বেকারী, কনফেকশনারি, ফ্রুটডিংক, জুস, বেভারেজ, হিমায়িত খাদ্যসহ নানাধরনের খাদ্যদ্রব্য এবং পিভিসিপাইপ, চেয়ার, টেবিলসহ নানাপণ্য উৎপাদিত পণ্যের অধিকাংশ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সড়ক পথের মাধ্যমে রপ্তানি করা হয়। এবারেই প্রথম প্রাণ গ্রুপ নৌপথে পণ্য রপ্তানি করতে যাচ্ছে। আজ প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নৌপথে প্রাণ পণ্য সরাসরি রপ্তানি শুরু হলো।
নৌপথে খাদ্যপণ্যের প্রথম চালান হিসেবে প্রাণ গ্রুপের পণ্য ২৫,০০০ কার্টন লিচি ড্রিংক নরসিংদীর পলাশে অবস্থিত প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক থেকে আজ রওনা হয়ে কলকাতা বন্দরের টিটি শেডে গিয়ে পৌঁছাবে। এটি স্থল বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি করলে ২৫টি ট্রাকের প্রয়োজন হতো। প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রাণ গ্রুপের রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৭ সালে ত্রিপুরাতে চানাচুর রপ্তানির মাধ্যমে। সেখান থেকে এখন ভারতের ২৮টি রাজ্যের প্রতিটিতেই প্রাণ পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।