সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরের নিকটবর্তী খোলপেটুয়া নদীর বন্যতলা এলাকার ভাঙ্গন পয়েন্ট মেরামত না হওয়ায় অব্যহত ভাঙ্গনের মুখে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রতাপনগর গ্রামের ভাইরাল হওয়া বহুল আলোচিত সেই হাওলাদার বাড়ির বায়তুন নাজাত জামে মসজিদটি। গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে খোলপেটুয়া নদীর ভাটার পানির টানে হঠাৎ করে মসজিদটি ভেঙ্গে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১০ আগস্ট খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে প্রতাপনগরের নিকটবর্তী বন্যতলা এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ প্রায় একশ’ মিটার এলাকা জুড়ে ভেঙ্গে যায়। নদীর পানিতে এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি পানি প্রবেশ শুরু করে প্রতাপনগর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির বায়তুন নাজাত জামে মসজিদটিতে। বাঁধের ভাঙ্গন পয়েন্ট মেরামত না হওয়ায় জোয়ারে মসজিদে পানি ঢোকে আবার ভাটায় পানি নেমে যায়। এভাবে চলতে থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল মসজিদটি।
এদিকে এই অবস্থা চলতে থাকায় প্লাবিত এলাকায় পানি সাঁতরে মসজিদটিতে আজান ও নামাজ আদায় করতেন মসজিদের ঈমাম ও খতিব হাফেজ মঈনুর রহমান। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তা মানুষের হৃদয়কে আকৃষ্ট করে। এঘটনার পর এলাকার মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য গত ৫ অক্টোবর মঙ্গলবার নৌকার ওপর বিশেষভাবে নির্মিত একটি ভাসমান মসজিদ উপহার দেন আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন। সেখানে একত্রে ৫৫ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সায়েদুল ইসলাম জানান, দুই মাস ধরে আমরা মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারিনি। পার্শ্ববর্তী বন্যতলা এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়। লোকালয়ের মধ্যদিয়ে নদীর জোয়ার ভাটা শুরু হয়। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে এলাকা ও মসজিদটি। আজ একেবারেই বিলীন হয়ে গেল মুসলমানদের ইবাদতের ঘরটি। ফজরের নামাজের পর যখন নদীতে ভাটা শুরু হয় সেই পানির টানে মসজিদটি ভেঙ্গে পড়ে।
প্রতাপনগর হাওলাদার বাড়ি বায়তুন নাজাত জামে মসজিদের ঈমাম ও খতিব হাফেজ মঈনুর রহমান বলেন, গতকাল রবিবার ফজরের নামাজের পর মসজিদটি ভেঙ্গে পড়েছে। অবকাঠামো একেবারেই বিলীন হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়ে পড়েছে আল্লাহর ঘর মসজিদটি। সেই থেকেই আমি এখানে বসে আছি, কি করব?
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে গত ১০ আগষ্ট বন্যতলা বেঁড়িবাঁধটি ভেঙ্গে যায়। এরপর থেকেই মানুষ পানিতে ভাসছে। বাঁধটি বাঁধার জন্য আমি চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো সহযোগিতায় করে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডেও কর্মকর্তাদেও গাফিলতির কারণেই প্রতাপনগর ইউনিয়নটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। গত জুম্মার দিন সকালে মসজিদটিও ভেঙ্গে যায় আজ রবিবার নদীতে চলে গেল। মুসলমান হিসেবে আমাদের এর থেকে কষ্ট আর কি হতে পারে।
সময় জার্নাল/আরইউ