.........
আমাদের পায়ের তলায় সর্ষে, আমরা থামতে আসিনি কখনও
আমাদের গন্তব্য অনেক দূর, সেই ফিরদাউস আছে যেখানে
আমরা ছুটতে ভালোবাসি,
আমরা ছুটতে থাকি।
আমাদের হেঁটে যাবার পালা শেষ হয়েছে সেই কবে -
পনেরোশো বছর আগে, এখন আমরা দৌড়াই
আমরা দৌড়াতে ভালোবাসি,
আমরা দৌড়াতে থাকি।
আলস্যে, বেখেয়ালে যারা ছিল তারা আমাদের অতীত
তারা পায়রা ওড়াতো আর নর্তকীর পায়ে আশরাফী বিলাতো দেদারসে,
অশ্লীলতায় ভরিয়ে ফেলতো প্রিয় কবিতার খাতা,
তাদের ভাবনাগুলো দিনশেষে কোনও মহামানবের দরগায়
সমর্পণ করতো নিজেকে,
সমর্পণ করতো পাপ মুক্তির আশায়।
তারা ছিল অন্ধকারের মাঝে জেগে ওঠা প্যাঁচা।
আমরা আলো জ্বালাতে শিখে গেছি,
আমরা আলো জ্বালাতে থাকি।
কোনও হুমকি বা অবরোধে আমাদের আটকানো যাবে না কখনও,
অবরোধের বিপরীতে আমরা একতার প্রতিরোধ গড়তে পারি।
একবেলা খেয়ে বেঁচে থাকতে পারি একমাস,
রমজান আমাদের প্রশিক্ষিত করে তুলেছে।
তাই ক্ষুধার ভয় দেখিয়ে কোনও লাভ নেই,
আমাদের নেতা পেটভরে খেতে পাননি কখনও
তাই আমরা আধপেটা থাকতে শিখে গেছি,
আমরা আধপেটা থাকি।
আমাদের মেয়েরা মোটা চাদরে আবৃত করে রাখে নিজেকে
প্রচন্ড গরমে বা ঠান্ডায়, ঝলসানো রোদ্দুর অথবা বর্ষায়
কোনও প্রতিকূলতায় তাদেরকে উন্মুক্ত করতে পারে না।
আমরা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করতে শিখে গেছি,
আমরা উপেক্ষা করি।
আমাদের একটা গ্রন্থ আছে, যা প্রতিনিয়ত
আমাদের উজ্জীবিত করে, সমৃদ্ধ করে, বাঁচিয়ে তোলে।
কেউ আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে পারে না,
কারও অস্বস্তির কারণ হয়ে আমাদের অস্তিত্ব রয়ে যাবে
পৃথিবীর অন্ত পর্যন্ত।
আমরা বাঁচতে শিখে গেছি,
আমরা বাঁচতে থাকি।
নেতা আমাদের প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছেন,
প্রতিরোধ করতে শিখিয়েছেন
তাই আমরা আত্নরক্ষা করি অথবা আক্রমণ করি,
নেতার আদেশে আমরা মারি অথবা মরি সত্যের দায়ে।
আমরা মরতে শিখে গেছি,
আমরা মরতে থাকি।
আমাদের গন্তব্য অনেক দূর, ফিরদাউস আছে যেখানে
গন্তব্যের পথে আমরা ছুটতে থাকি, ছুটতে থাকি, ছুটতেই থাকি।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
১৫ অক্টোবর ২০২১।