বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

আকস্মিক বন্যায় স্বপ্ন এক নিমিষেই ধূলিসাৎ!

শনিবার, অক্টোবর ২৩, ২০২১
আকস্মিক বন্যায় স্বপ্ন এক নিমিষেই ধূলিসাৎ!

শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট :

বন্যার পানি নেমে গেছে। আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেছে তিস্তা পাড়ের লোকজন। কিন্তু তারা যে বাড়ি আর যে ফসলী ক্ষেত রেখে গেছেন তা কিন্তু ফিরে পায়নি। পানির স্রোতে বসত বাড়ি যেমন ভেঙ্গে গেছে তেমনি জমির উঠতি ফসলও নষ্ট হয়ে গেছে। সব মিলে এবারের বন্যায় লালমনিরহাটে তিস্তা পাড়ের লোকজনের অপুরণীয় ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ যে কত, তা খালি চোখে দেখে বলা সম্ভব নয়।

বন্যা কবলিত এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্যা পানি নেমে গেলেও রেখে গেছে ক্ষয় ক্ষতির চিহ্ন। এবারে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নসহ জেলার পাটগ্রাম, কালীগঞ্জ, আদিতমারী, হাতীবান্ধা ও সদর উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকাগুলোর হাজার হাজার পরিবার শুধু পানিবন্দি হয়নি, স্রোতে অনেকের বসত বাড়িও ভেঙ্গে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর অধিকাংশ কাঁচা পাকা রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট ভেঙ্গে গেছে। হাজার হাজার জমির ধান, ভুট্টা, আলু ও বাদামসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে গেছে। অনেক জমিতে বালু পড়ে চর জেগে উঠেছে।

এ দিকে বন্যার পানির চাপে তিস্তা ব্যারাজ ফ্লাড বাইপাস ও কাকিনা-মহিপুর সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় লালমনিরহাটের সঙ্গে রংপুর ও নীলফামারীর সড়ক যোগাযোগ এখনো বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা পাড়ের কৃষক সফিকুল ইসলাম জানান, আর কয়েকদিন পর ক্ষেতের আমন ধান কেটে ঘরে তোলার কথা ছিল। আশা ছিল এবার আমন ধানে গোলা ভরে যাবে। তার স্বপ্ন এক নিমিষেই ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। আকস্মিক বন্যায় তার সাত বিঘা জমির আমন ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম এলাকার কৃষক সফিয়ার রহমান বলেন, ভাবতেই পারছি না ধান ঘরে তোলার আগেই নষ্ট হয়ে যাবে। নিরুপায় হয়ে আছি। কি ভাবে সংসার চালাবো, কিভাবে সার ও কীটনাশকের বকেয়া শোধ করবো?

তিনি আরও বলেন, ‘জীবনে এমন আকস্মিক বন্যা দেখিনি। হঠাৎ পানি এসে ক্ষেতের ধান ডুবিয়ে দিল। সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে সেগুলো এখন গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছি।

হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তাপাড়ের ডাউয়াবাড়ী গ্রামের কৃষক কবির হোসেন বলেন, অকাল বন্যায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছি। আট বিঘা জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছিলাম। সবগুলো ভুট্টাই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষেতে দেওয়ার জন্যে সার কিনে বাড়িতে রেখেছিলাম। বন্যায় সেগুলোও নষ্ট হয়েছে। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আমরা চরে ভুট্টা চাষ করি। আকস্মিক বন্যা আমাদেরকে আরও বেশি ঋণগ্রস্ত করে দিয়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি সস্প্রসারণ, প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, উজানে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে গত মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তার পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। বুধবার সকালে এক নিমিষেই তিস্তার পানিতে প্লাবিত হয় নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো। ১৫ হাজার একরের বেশি জমির ফসল বন্যায় তলিয়ে গেছে। দেড় শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানির তোড়ে খামারের বিপুল সংখ্যক হাঁস-মুরগিও ভেসে গেছে।

লালমনিরহাট কৃষি সস্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক শামিম আশরাফ বলেন, অকাল বন্যায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসলের খেত এখনো পানির নিচে। কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে কৃষি বিভাগ মাঠে কাজ করছে।

সময় জার্নাল/ইএইচ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল