নিজস্ব প্রতিবেদক: শেখ রাসেল পুস্পকাননে ফুল ফুটতো আবার অভিমানে ঝরে যেত। ৫৮৫ দিন রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা, শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারেনি শিক্ষকেরা, আড্ডা জমেনি চত্বর, মাঠ কোথাও। অবেশেষে সেই খাঁ খাঁ শূন্যতা শেষে মুখরিত হয়েছে ১৩ একরের ছোট এই ক্যাম্পাস। এদিন ক্লাসরুমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দঘন পরিবেশ চোখে পড়ে, অনেককে আবেগে আপ্লুত হতে দেখা যায়।
দীর্ঘ ১৯ মাস পর আজ রবিবার (২৪ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল ও চকলেট দিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিয়েছেন কলেজের শিক্ষকরা। এসময় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে বসানো হয়েছে। তবে সুধু মাত্র অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরাই আজ ক্লাস রুমে ফিরেছে। বাকি বর্ষগুলোতে চলছে চূড়ান্ত পরীক্ষা। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত মাস থেকেই।
দীর্ঘদিন পর খুললেও উপস্থিতি কিছুটা কম ছিলো। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গ্রামে বসবাসরত অনেক শিক্ষার্থী এখনো ঢাকা আসেনি। তারা হলে উঠলে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আরো বাড়বে।
দীর্ঘদিন পর কলেজে এসে ক্লাস করতে পারায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, করোনার মধ্যে অনলাইনে ক্লাস করতে অসুবিধা হয়েছে। এখন সরাসরি স্যারদের থেকে ক্লাস করতে পারছেন। এতে তাদের লেখাপড়া সংক্রান্ত বিষয়গুলো খুব সহজেই বুঝতে পারছেন।
অনার্স ৪র্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেক দিন পর ক্লাসে ফিরে খুব ভালো লাগছে। প্রায় এক বছর আগে ৩য় বর্ষের ফরমপূরণ সংক্রান্ত কাজের জন্য একবার ক্যাম্পাসে এসেছিলাম। কিন্তু ক্লাসে বসা হয়নি। আজ ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ায় আবার এসেছি। ক্লাস করতে পারছি। তাই খুবই ভালো লাগছে।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, অনেকদিন পর আজ ক্লাসে ফিরেছি। খুব ভালো লাগছে। স্যার আমাদের ভালোবাসা ও ফুল দিয়ে বরণ করে নিচ্ছেন। এটা অনেক আনন্দের বিষয় আমাদের জন্য। আমরা এজন্য স্যারদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা জানাই।
দীর্ঘদিন পর তিতুমীর কলেজ খুলে দেওয়া প্রসঙ্গে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, সত্যিকার অর্থে এতদিন পর শ্রেনীকক্ষে ফেরার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। প্রায় ২ বছর আমরা সবাই ঘরে আবদ্ধ ছিলাম। আমরা অনলাইনে ক্লাস নিয়েছি কিন্তু সেখানে সকলে যুক্ত হতে পারেনি। আজ শিক্ষার্থীরা আমাদের সামনে ক্লাস করবে, পরস্পরের দেখা হবে, ভাব বিনিময় হবে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বিধি মানার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বিধি মানার ব্যাপারে পুরো সতর্ক আছি। আমরা চেষ্টা করবো নিরাপদ দূরত্ব মেনেই ক্লাস নেওয়ার জন্য। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধির ব্যপারে আমরা সচেতন আছি।
এমআই