সময় জার্নাল প্রতিবেদক : সাভারের আমিনবাজার ও বলিয়ারপুরে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চারটি ওয়্যারহাউস পরিদর্শন করে তা সিলগালা করে দিয়েছে হাইকোর্ট গঠিত পরিচালনা বোর্ড। এ সময় বোর্ডের চেয়ারম্যান এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে অপর চার সদস্য বোর্ডের পরিচালক অতিরিক্ত সচিব (ওএসডি) মাহবুব কবির, সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ফখরুদ্দিন আহমেদ এবং ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককের নেতৃত্বে বোর্ডের সদস্যরা সাভারের আমিনবাজার এলাকার পিংক ফুড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে সরেজমিন ইভ্যালির দুটি ওয়্যারহাউস পরিদর্শন করেন। এসময় তারা সেখানে বেশ কিছু টেলিভিশন, কোমল পানীয়সহ ইলেকট্রনিকস মালপত্র দেখতে পান। পরিদর্শন শেষে ওয়্যারহাউস দুটি সিলগালা করে দেন তারা। পরে বলিয়ারপুর এলাকায় অবস্থিত ইভ্যালির অপর দুটি ওয়্যারহাউস পরিদর্শন শেষে সেগুলোও সিলগালা করে দেন।
আমিনবাজারে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বোর্ডের চেয়ারম্যান এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ইভ্যালির সম্পদের পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। সরেজমিন পর্যবেক্ষণ শেষে অডিট করা হবে। এরপরই এ বিষয়ে বলা যাবে। এখনো অনেক কিছু করা এবং দেখার বাকি রয়েছে। এখন পর্যন্ত বোর্ডের মাত্র তিনটি সভা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক এই বিচারপতি বলেন, ‘হাইকোর্ট আমাদের, যদি সম্ভব হয় বিজনেস চালিয়ে যাওয়া এবং না হলে অডিটের মাধ্যমে সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ ও মূল্য নির্ধারণ করে গ্রাহকের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। এখন আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা ইভ্যালির ওয়্যারহাউসগুলো পরিদর্শন এবং অডিটের মাধ্যমে সব সম্পদ নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অডিটের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। আমরা আশাবাদী একটি সুষ্ঠু সমাধান হবে।’
বোর্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব কবির মিলন বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় অপশনটি এই মুহূর্তে চিন্তা করছি না। যদি বিজনেস চালিয়ে যেতে পারি, সেটিই হবে মঙ্গলজনক। তবে কোন দিকে আমরা যাব, সেটি এখনই বলা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইভ্যালির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে আমরা তথ্য নেব। এ ছাড়া ভ্যাট, ইনকাম ট্যাক্সসহ বিভিন্ন সংস্থা ও গ্রাহকের কাছ থেকেও তথ্য নেওয়া হবে। এরপর সে তথ্য হাইকোর্ট অনুমোদিত অডিট ফার্মকে দেওয়া হবে। তারা অডিট করবে এবং অডিটের ওপর ভিত্তি করেই আমরা সামনে অগ্রসর হব।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য এখান থেকে সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য তুলে এনে একটি সঠিক প্রতিবেদন তৈরি করা। ইভ্যালির প্রতারিত গ্রাহকদের তাদের কাছে থাকা তথ্যগুলো সংরক্ষণ করে রাখার অনুরোধ জানান তিনি।
গত ১৮ অক্টোবর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের কোম্পানি বেঞ্চ আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ইভ্যালি পরিচালনা করার আদেশ দেন।
এই কমিটি ইভ্যালির কোথায় কী আছে, সবকিছু বুঝে নেবে। কোম্পানি যেভাবে চলে, সেভাবে প্রথমে বোর্ড মিটিং বসবে। তাদের দায়িত্ব হলো টাকাগুলো কোথায় আছে, কোথায় দায় আছে তা দেখা। আদালতের লিখিত আদেশ পাওয়ার পরই বোর্ড মিটিং করে তারা সরেজমিন ইভ্যালির ওয়্যারহাউস পরিদর্শন করছেন। ২৩ নভেম্বর আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেবে এই কমিটি।
সময় জার্নাল/এসএ