দুলাল বিশ্বাস। গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : অনেক সময় প্রান্তিক কৃষকেরা ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করতে ও ঋণের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে সঙ্কোচ বোধ করেন। তাই কৃষকেরা চাষাবাদ করতে চড়া সুদে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেয়। কিন্তু ঋণের বোঝা টানতে গিয়ে কৃষকেরা লাভের মুখ দেখতে পায় না। ব্যাংক থেকে ৪% সুদে ঋণ নেওয়া যায় এই তথ্যই জানে না অনেক কৃষক। এমন তথ্য কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ব্যাংক কর্মকর্তাবৃন্দ ও কৃষকদের নিয়ে মাঠ দিবস পালন করেছেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম।
মঙ্গলবার বিকালে ডুমুরিয়া ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে মাঠ দিবস পালিত হয়। মাঠ দিবসে ইউএনও ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে হাজির হন। তখন ব্যাংক কর্মকর্তা ও কৃষকদের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম সহ উপজেলার কৃষিঋণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তাবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
টুঙ্গিপাড়া এক্সিম ব্যাংকের ম্যানেজার নাজমুল হাসান বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৪% সুদে মসলাজাতীয় চাষাবাদে কৃষকেরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবে। কিন্তু কৃষকেরা সহজ শর্তে ঋণ পেতে ব্যাংকে যোগাযোগ করেনা। তারা চড়া সুদে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করে। তাই কৃষকেরা যাতে ব্যাংক থেকে সহজে ঋণ নিতে পারে সেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে ব্যাংক কর্মকর্তা ও কৃষকদের মধ্যে মতবিনিময় সভা হয়। কৃষকেরা ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ বিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্য মাঠে বসেই পাবেন ও পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন।
লেবুতলা গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, স্বল্প সুদে যে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া যায় এই কথা অনেক কৃষক জানেনা। যদিও বা কেউ জেনে থাকে কিন্তু ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে ঋণের কথা বলতে সংকোচ বোধ করেন। তাই তারা বিভিন্ন বেসরকারি এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ গ্রহণ করে। কিন্তু সুদের পরিমাণ বেশি থাকায় কৃষকেরা লাভের মুখ দেখতে পায় না। তাই ইউএনও স্যার ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে ও কৃষকেরা যাতে ঋণ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য মাঠে বসেই পেতে পারে সেই জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের নিকট অনুরোধ করেছেন। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্মকর্তারা তার সাথে সহমত পোষণ করেন। স্বল্প সুদে ঋণ পেয়ে মসলাজাতীয় চাষাবাদ করলে দেশ ও দেশের কৃষক লাভবান হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার। সেই অঙ্গীকারকে বাস্তবায়ন করতে ব্যাংক কর্মকর্তা ও কৃষকদের মধ্যে মতবিনিময় করিয়ে মাঠ দিবস পালিত হয়েছে। কৃষকেরা স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে যাতে আরও স্বাবলম্বী হতে পারে সেই কারণে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এতে কৃষিকাজে উদ্যোক্তা বাড়বে ও কৃষকেরা স্বাবলম্বী হবে। কৃষকেরা ঋণ বিষয়ক তথ্য মাঠে বসেই পাবে পরবর্তীতে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করতে পারবে।
সময় জার্নাল/আরইউ