ইসাহাক আলী, নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের দুইটি ইউনিয়নে ফলাফল পরিবর্তনের অভিযোগ এনে এক মেম্বারপ্রার্থী নূরুজ্জামান প্রতিবাদ সমাবেশ ও এক চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহতাব আলী সংবাদ সম্মেলন করেছে।
সকালে সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ২নং ওয়ার্ডে এক মেম্বার প্রার্থীকে বিজয়ী করে ফলাফল দেয়ার পর বিজয় মিছিল শেষে পরে ফলাফল সিটে কাটাকাটি করে ফলাফল পরিবর্তন করে আরেক জনকে বিজয়ী করে দেয়ালে ফলাফল টাঙ্গিয়ে দিয়ে চলে যান প্রিজাইডিং অফিসার। এ ঘটনার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে প্রথম বিজয়ী মেম্বার নূরুজ্জামান ও তার সমর্থকরা।
এছাড়া বিকালে নাটোর সদরের বড় হরিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদের ভোট পুনঃ গণনার দাবী জানিয়েছেন নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএনপি নেতা মাহতাব আলী।
শনিবার সকালে প্রথমে বিজয় ঘোষনা করা মেম্বার প্রার্থী নুরুজ্জামান লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া বাজারে এই প্রতিবাদ সমাবেশ করে বিষয়টি তদন্ত করে প্রিজাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও পরিবর্তিত ফলাফল বাতিলের দাবি করেন। এ সময় তারা বলেন, গত ১১ নভেম্বর ভোট গ্রহন শেষে সন্ধ্যা ৬ টা ২০ মিনিটে প্রিজাডিং অফিসার ফুটবল মার্কা প্রতিকের নূরুজ্জামানকে বিজয়ী করে তার এজেন্ট আওলাদের হাতে ফলাফল সিট প্রদান করে।
একই ফলাফল সিট প্রতিদ্বন্দী মোরগ মার্কার প্রার্থী খন্দকার মোঃ আকতার হোসেনের এজেন্ট আতর আলীকে প্রদান করে। যেখানে নুরুজ্জামান প্রাপ্ত ভোট ৮১৮ আর আকতারের ৭৯৮ ভোট। এই ফলাফল নিয়ে নূরুজ্জামান ও তার সমর্থকরা বাজারে বিজয় মিছিল করে অনেকেই বাড়ি চলে যায়। পরে প্রিজাইডিং অফিসার কলম দিয়ে কাটাকাটি করে নূরুজ্জামানের ঘরে আকতারের ভোট বসিয়ে সেই তালিকা দেয়ালে টানিয়ে দিয়ে চলে যায় ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়। পরে জানতে পেরে তারা কেন্দ্রে গিয়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে খুজে পাননি। তাই তারা সমাবেশ করে এর প্রতিবাদ জানিয়ে এই অনিয়মের সূরাহা করে নূুরজ্জামানের নাম গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করে পরিবর্তিত ফলাফল বাতিলের দাবি করে।
এ ব্যাপারে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, চূড়ান্ত সিটে ফলাফল তুলতে ভুল হয়েছিল পরে তা সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু সংশোধনের সময় নূরুজ্জামানের এজেন্ট বা প্রার্থী কেউ উপস্থিত ছিলেন না বলে তিনি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, অভিযোগকারি চাইলে নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ দিতে পারেন কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
অপরদিকে শনিবার বিকেলে সদরের শংকর ভাগ বাজারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহতাব আলী অভিযোগ করেন, বিজয়ী চেয়ারম্যান ওসমান গণি ভুঁইয়া ও তার ছেলে পরাজিত চেয়ারম্যান মাহতাব আলীর আত্বীয় স্বজনদের বাড়িতে হামলা ভাংচুর করছে। তিনি এসব অন্যায় জুলুম বন্ধের দাবী জানিয়ে তার লোকজনের নিরাপত্তার দাবী জানান। একই দিন তিনি নাটোরের পুলিশ সুপার ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত দুটি অভিযোগ করেন। এসব অভিযোগে তিনি বড় হরিশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদের ভোট পুনঃ গণনার দাবী জানিয়ে বলেন, সুন্দরভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হলেও ৫টি কেন্দ্র থেকে সন্ধ্যায় তার এজেন্টদের স্বাক্ষর নিয়ে জোর করে বের করে দেয়া হয়।
ফলাফল শিটও তাদের দেয়া হয়নি। ইউনিয়নের গুনারিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফলাফল শীট কেটে নৌকা মার্কার ২৯৩ ভোটের জায়গায় ৯১৯ ভোট লিখে পরিকল্পিত ভাবে তাকে পরাজিত করা হয়েছে। এ সময় তিনি, দত্তপাড়া ও রহিমকুড়ি, ধলাট, গোয়ালডাঙ্গা ও গুনারিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পারভীন পাবলিক হাইস্কুল ও নাটোর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ কেন্দ্রের ভোট তিনি পুনঃ গণনার দাবী জানিয়েছেন।
বিজয়ী চেয়ারম্যান ওসমান গণি ভুঁইয়া হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন এসব মিথ্যা প্রচারণা।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য নির্বাচনের রিটানিং অফিসার ও নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আব্দুস সালাম বলেছেন, রোববার তার আবেদনটি দেখে উর্দ্ধতনদের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সময় জার্নাল/এলআর