ডা. জয়নাল আবেদীন টিটো :
নতুন ধান কাটার আহবান এবং শীতের বারতা নিয়ে অগ্রহায়ণ মাস শুরু হল আজ। রাতে হালকা কুয়াশা দেখে এবং ভোরে শিশির গায়ে মেখে বুঝেছি, পৌষের ছোট ভাই এসেছে। দিনের বেলায় না-শীত না-ঊষ্ণ আবহাওয়া এবং শেষ রাতে হালকা শীতের আমেজ বেশ উপভোগ্য। বাতাস শীতের মত শুষ্ক নয়, সূর্যটাও প্রখরতার খোলস ছেড়ে কিছুটা নরম হয়ে এসেছে। অঘ্রাণে দরিয়ার পানি ক্রমাগত ছুটে চলে সাগরের দিকে, নদী-বিল-হাওড়ের পানি দ্রুত শুকাতে থাকে। মাছ ধরার এ মাসটি সত্যিই উপভোগ্য।
অগ্রহায়ণে আকাশ থাকে অনেকটা মেঘমুক্ত। মাঠে কাঁচা-পাকা ধান, যেন কৃষকের গোলায় উঠি উঠি করছে। খনা দিদি বলেছেন, "যদি বর্ষে আগুণে, রাজা যায় মাগনে"। অগ্রহায়ণ মাসে অতি বৃষ্টির বর্ষণ হলে কৃষকের শষ্য নষ্ট হয়। যেন পাকা ধানে মই পড়ে। দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। খাদ্যশস্যহীন প্রজাকে খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখার জন্য রাজাকে ভিন দেশে গিয়ে ভিখ মাগতে হয়।
দুই.
নোবেলজয়ী কবি রবিঠাকুর লিখেছেন-
‘আজি হেমন্তের শান্তি ব্যাপ্ত চরাচরে
জনশূন্য ক্ষেত্র মাঝে দীপ্ত দ্বিপ্রহরে
শব্দহীন গতিহীন স্তব্ধতা উদার
রয়েছে পড়িয়া শ্রান্ত দিগন্ত প্রসার
স্বর্ণশ্যাম ডানা মেলি।’
কাজী নজরুল ইসলাম তার 'অঘ্রানের সওগাত' কবিতায় লিখেছেন--
ঋতুর খাঞ্চা ভরিয়া এল কি ধরণির সওগাত ?
নবীন ধানের আঘ্রাণে আজি অঘ্রাণ হল মাত।
‘গিন্নি-পাগল’ চালের ফিরনি
তশতরি ভরে নবীনা গিন্নি
হাসিতে হাসিতে দিতেছে স্বামীরে, খুশিতে কাঁপিছে হাত।
শিরনি বাঁধেন বড়ো বিবি, বাড়ি গন্ধে তেলেসমাত!
.................................
Zainal Abedin Tito
১লা অগ্রহায়ণ, ১৪২৮ বাংলা
১৬ই নভেম্বর, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ