নিজস্ব প্রতিনিধি: খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে, তাকে অবিলম্বে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হোক। অন্যথায় সব দায় দায়িত্ব এই সরকারকে বহন করতে হবে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চক্রান্তে আজকে তিনি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন। আমরা সবাই জানি একটা মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে সাজা দিয়ে প্রথম দিকে একটি পরিত্যাক্ত কারাগারে রাখা হলো। তখন তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। পরে জনগণের চাপে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো, তারও পর করোনা শুরু হলে তাকে বাসায় যাওয়ার অনুমতি দিল। তিনি আজকে অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় সিসিইউতে আছেন।
তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি তিনি প্রথমে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে দীর্ঘ চার মাস জীবন মরনের সাথে যুদ্ধ করে বাসায় ফিরলেন। তার কিছু দিন পরেই অসুস্থ হলে তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে যখন তিনি বাসায় ফিরলেন মাত্র ছয় দিনের মাথায় তাকে আবারো হাসপাতালে আসতে হলো।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। আমি আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না। গতকাল রাতে প্রথম তিনি সিসিইউতে তার বেড থেকে চেয়ারে বসেছেন। তিনি অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় আছেন। আমরা জানি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার যে ভয়াবহ চক্রান্ত সেই চক্রান্তে তাকে এখন জীবন থেকে সরিয়ে দেয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। আমরা আল্লাহর কাছে আজকে এই প্রার্থনা করবো যে আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ করেন। শুধু বিএনপির জন্য নয় দেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য তাকে আমাদের খুব প্রয়োজন।
খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চেয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আমরা তার জন্য দোয়া করি। আজকে তার জন্য দোয়া করতে আমরা একটা খোলা জায়গা পাই না। আমরা সভা সমাবেশ করতে জায়গা পাই না। কারণ এই সরকার জানে যে খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে যদি আমরা বাইরে বের হই তাহলে সমস্ত দেশ উজ্জীবিত হবে এবং অনুপ্রাণিত হবে।
তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, চিকিৎসকরা বলেছেন, তার অনেক ধরনের অসুখের চিকিৎসা প্রয়োজন। এগুলোর সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য এই দেশে সেরকম কোনো হাসপাতাল নেই। যারা মাল্টিডিসিপ্লিনারি রোগের চিকিৎসা করতে পারেন। এজন্য বার বার তার পরিবার থেকে আবেদন করা হয়েছে। অন্তত মানবতার স্বার্থে তাকে বাইরে চিকিৎসা করার সুযোগ দেয়া হোক। আমরা এ বিষয়ে বার বার কথা বলেছি, কিন্তু তাকে সেই চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, আজকে যখন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ তখন পত্রিকায় দেখছি তার পরিবার থেকে আবারো আবেদন করা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে তাকে বাইরে চিকিৎসা করতে সুযোগ দেয়া হোক। কারণ এই নেত্রী গণতন্ত্রের নেত্রী, তার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে সমস্ত দায়-দায়িত্ব এই সরকারকেই বহন করতে হবে। আমরা বলতে চাই, আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, আপনারা মানবতার স্বার্থে তাকে বিদেশে বিকিৎসার সুযোগ করে দেন।
দোয়া মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, ডা: সিরাজউদ্দীন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সহ-দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলীম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
সময় জার্নাল/এলআর