..............
আজ খুব কথায় পেয়েছে আমায়,
তুমি শুনছো কি?
তোমার সাথে রোজ পাঁচ বেলা কতো কথা বলি,
হয়তো শোন, হয়তো বা অগ্রাহ্য কর,
তবু বলি, মন দিয়ে কিংবা মন না দিয়ে,
অভ্যাসে বলি, নিয়ম তাই বলি,
কখনো বা ভালোবেসে বলি,
রোজ পাঁচ বেলা বলি, বলতে হয় তাই।
তবু আজ খুব কথায় পেয়েছে আমায়,
তুমি শুনছো কি?
তোমার অনেক আছে, অগণিত
কতজন তোমায় ভালোবেসে মরণ সিন্ধু পেরোলো,
তোমাকে পাবে বলে ছুটে গেল উন্মাদের মতো মরু প্রান্তরে,
তোমার জন্যে পরম তৃপ্তিতে হেঁটে গেলো ফাঁসির মঞ্চে,
কতজন উৎসর্গ করলো পরিবার-পরিজন, আপন প্রাণ,
কি অবলীলায় নিজের হৃৎপিণ্ডটাকে ছিন্ন ভিন্ন করে
তোমার জন্য তৈরি করলো রক্তিম উপহার।
আমি তাদের মতো হতে পারিনি,
আজও দেখাতে পারিনি তোমাকে ভালোবাসার কোনো নমুনা।
তবু আজ খুব কথায় পেয়েছে আমায়,
তুমি শুনছো কি?
আমার ভারি ঈর্ষা হয়! ভারি লজ্জা!
সদ্য বিবাহিতা বউটি,
মাত্র নতুন ঘরে এসেছে,
অথচ কি নিশ্চিন্তে স্বামীকে পাঠিয়ে দিলো
শত্রুর তীরের সামনে, লড়াইয়ের ময়দানে,
তোমার রঙে সে রাঙিয়েছে মন,
তাই মেহেদীর রঙে তার মন ভরেনি।
আর বিলাপ না করা সেই অদ্ভুত মা!
চার-চারটে ছেলে চলে গেলো চীরতরে,
তোমার শত্রুকে আঘাত করতে গিয়ে,
তোমার পতাকাকে উর্ধ্বে তুলতে গিয়ে,
তবু সেই মাকে দেখো,
অন্তর জুড়ে যেন শান্তির ঢেউ।
আমি তাদের মতো হতে পারিনি,
আজও আমি বেঁচে আছি আয়েশের সংসারে,
যেখানে তোমাকে ভোলা খুব স্বাভাবিক।
ভিষণ অকেজো আমি তোমাকে পাওয়ার এই প্রতিযোগিতায়,
সবাই তোমাকে পায়, আমি শুধু বারেবারে তোমাকে হারায়।
তবু আজ খুব কথায় পেয়েছে আমায়,
তুমি শুনছো কি?
আজ শুধু তোমার সাথে,
জীবনে একটিবার না হয় হয়ে যাক গভীর কথোপকথন,
একটিবার না হয় হয়ে যাক তোমার দুর্দান্ত মমতার সাথে
আমার দুর্বিনীত হৃদয়ের নিবিড় বিনিময়,
তারপর -
যদি মৃত্যু হয় তা হবে পরম প্রশান্তির।
আমি বুঝে নেবো,
পৃথিবীতে তোমাকে পাওয়ার স্বাধ মেটেনি হয়তো,
তবে চোখ বুজলেই যেন তোমাকেই পেয়ে যায়
হে প্রভু, হে প্রাণের মালিক!
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
১৮ নভেম্বর ২০২১।