নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের বাড়িতে গুলি, ককটেল বিষ্ফোরণ ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মিরা।
রোববার (২১ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্যে রাখেন, সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসিব আহসান আলাল,চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান আরিফ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহেদুল হক কচি, চরফকিরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশ্রাফ হোসেন রবেন্স, উপজেলা যুবলীগের সদস্য শাহদাত হোসেন পবেন্স প্রমূখ।
বক্তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি খিজির হায়াত খানের বাড়িতে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সময় ধারণকৃত সিসি টিভি ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি করেন। মানববন্ধনে বক্তারা খিজির হায়াত খানের বাড়িতে সশস্ত্র হামলাকারী মানিক ওরফে বুবির হোলা ও অস্ত্রধারী পিচ্ছি মাসুদ ওরফে ডাকাত মাসুদসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
অপরদিকে, এ ঘটনায় রোববার (২১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩ ধারায় ৩৪জনকে আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কাদের মির্জার অনুসারী মানিক ওরফে বুবির হোলা দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে পিচ্ছি মাসুদ ওরফে ডাকাত মাসুদকে। পুলিশ এ মামলার এজহার নামীয় ৫নং আসামি উপজেলার চর হাজারী ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের নুরনবীর ছেলে আব্দুল কাইয়ুমকে (৩৩) গ্রেফতার করে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে।
প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার (২০ নভেম্বর) রাত পৌনে ৮টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের বাড়িতে গুলি,ককটেল হামলা ও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠে কাদের মির্জার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে।
তাৎক্ষণিক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান গণমাধ্যম কর্মিদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জে চলমান রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে কাদের মির্জার অনুসারীরা ৮-১০টি মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে আমার গ্রামের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাসভবনের প্রধান ফটক ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে হামলাকারীরা জানালার কাচ ভাঙচুর করে ১৫ মিনিট ধরে বেশ কয়েকটি হাতবোমার (ককটেল) বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। হামলাকারীরা ঘরে ঢুকতে পারলে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলত।
খিজির হায়াত খান অভিযোগ করে আরো বলেন, জেলা শহর মাইজদীতে গতকাল শনিবার নোয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কাদের মির্জা যেতে পারেনি। প্রতিনিধি সভার কার্ড গুলো আমার কাছে দেয়া হয়। কাদের মির্জা ১৫-২০টি হাইস গাড়ি ভাড়া করে। কিন্তু তার কোন লোক প্রতিনিধি সভায় যেতে পারেনি। প্রতিনিধি সভায় আমার দেওয়া বক্তব্যের জের ধরে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এর আগে গত ৮ মার্চ বসুরহাট বাজারে কাদের মির্জার নেতৃত্বে অনুসারীরা আমার ওপর হামলা চালিয়ে ছিলেন। এছাড়াও তার অনুসারীরা আরো একবার আমার ওপর হামলা চালায় এবং দুইবার আমার বাড়িতে বোমা হামলা চালায়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ। অপর আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
সময় জার্নাল/এলআর