শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

কাঁকড়ার জন্য রাস্তা বন্ধ!

মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৩, ২০২১
কাঁকড়ার জন্য রাস্তা বন্ধ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অস্ট্রেলিয়ার ক্রিসমাস আইল্যান্ড। অরণ্য থেকে বেরিয়ে কাঁকড়াগুলি সমুদ্রের দিকে যায়। এই সময়ে সিজনের প্রথম বৃষ্টিপাত হয় এখানে। ফলে পথ বৃষ্টিস্নাত থাকে এবং সেই বৃষ্টিভেজা পথ ধরেই ধীরে ধীরে হেঁটে যায় কাঁকড়ার দল। দেখে মনে হবে ঠিক যেন লাল গালিচা পেতে দিয়েছে প্রকৃতি। কাঁকড়ার দল যাতে নিরাপদে যেতে পারে সেজন্য 'ক্র্যাব ব্রিজ'ও বানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই আইল্যান্ডে। রাস্তাঘাটে নো এন্ট্রি বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়। 

কাঁকড়াগুলি নানা পথ দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে যায়। ফলে সব রাস্তাই এ সময়ে নিরাপদ রাখা হয়। ক্রিসমাস আইল্যান্ডে মোট কাঁকড়ার সংখ্যা আনুমানিক ৫০ মিলিয়ন যা পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রকৃতিপ্রেমিক ও পরিবেশপ্রমীরা কাঁকড়াদের এই পরিযানকে 'নেচার্স মোস্ট কালারফুল মাইগ্রেশন' অ্যাখ্যা দিয়েছেন। সমগ্র দ্বীপ জুড়ে বিশাল লাল কাঁকড়ার দলকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে সাগরের দিকে যাত্রা করতে দেয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশকে একেবারে স্থবির করে দেয়া হয়।

প্রকৃতির সবচেয়ে রঙিন এবং আকর্ষণীয় এই মাইগ্রেশনের জন্য প্রাণীদের সুরক্ষার কথা ভেবে স্থানীয় মানুষজনও প্রশাসনের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করেন। পার্ক অস্ট্রেলিয়া জানাচ্ছে, বিখ্যাত এই কাঁকড়াগুলো আসলে ক্যানিবালিস্টিক। দ্বীপের সকল কাঁকড়া একই সময়ে নিজেদের ঘর ছাড়ে এবং মিলন ও প্রজননের উদ্দেশ্যে সমুদ্রের দিকে যাত্রা করে। এই অভিবাসন প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেয় পুরুষ কাঁকড়ারা এবং মেয়ে কাঁকড়ারা তাদের সঙ্গ দেয়। পুরুষ কাঁকড়ারা সঙ্গমের পরে জঙ্গলে ফিরে যায়, কিন্তু স্ত্রী কাঁকড়ারা ডিম পাড়ার জন্য প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে গর্তের মধ্যে থাকে।

প্রতিটি মহিলা কাঁকড়া ১ লক্ষ পর্যন্ত ডিম উত্পাদন করতে পারে। প্রতি বছর, দ্বীপের মানুষজন এই অসাধারণ দৃশ্য প্রতক্ষ করার জন্য নিজেরাই কাকঁড়াদের জন্য অস্থায়ী ব্রিজ বানিয়ে দেন। অনেকসময় স্থানীয়রা কাঁকড়াগুলিকে রাস্তার ধারে ঝাড়ু দিয়ে সরিয়ে দেয় যাতে যানবাহন যাওয়ার সময় তাদের পাশ কাটিয়ে যেতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার কাছাকাছি অবস্থিত দ্বীপের সৈকতগুলি কাঁকড়ার আগমনে প্লাবিত হয়, দেখতে অনেকটা লাভা প্রবাহের মতো দেখায়।

ক্রিসমাস আইল্যান্ড ন্যাশনাল পার্কের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক বিয়াঙ্কা প্রিস্ট বলেছেন: 'ক্রিসমাস আইল্যান্ড ন্যাশনাল পার্কের কর্মীরা লক্ষ লক্ষ কাঁকড়াকে তাদের বনের বাড়ি ছেড়ে উপকূলের দিকে পৌঁছে দেবার জন্য দ্বীপ জুড়ে কয়েক কিলোমিটার অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করে দেন। বিশ্ব-বিখ্যাত প্রকৃতিবিদ স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো লাল কাঁকড়ার স্থানান্তরকে বর্ণনা করেছেন "একটি বড় লাল পর্দা যেন ধীরে ধীরে সমুদ্রের দিকে সরে যাচ্ছে"।

বছরের পর বছর ধরে পর্যটকরা এই বিরল ঘটনার সাক্ষী হতে বিশ্বের প্রতিটি কোণ থেকে ছুটে আসেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিসমাস আইল্যান্ডে। লাল কাঁকড়া- ডাকাত বা নারকেল কাঁকড়া নামেও পরিচিত। লুনার ক্যালেন্ডারের শেষ ত্রৈমাসিকে উচ্চ জোয়ারের পানিতে এগুলি জন্মায়। কচি লাল কাঁকড়াগুলি ক্রিসমাস দ্বীপের গ্রীষ্মমন্ডলীয় বনে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রায় এক মাস পর ধীরে ধীরে সমুদ্র থেকে তীরের দিকে ফিরে আসতে থাকে।

সময় জার্নাল/এসএ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল